জানুয়ারিতে সড়কে ঝরল ৬০৮ প্রাণ

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫:০৪

ফাইল ছবি

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ৬২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৬০৮ জনের প্রাণ গেছে। এসব দুর্ঘটনায় এক হাজার ১০০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ৬০৮ জনের মধ্যে নারী ৭২ জন, শিশু ৮৪ জন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। জানুয়ারিতে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬২১টি; এর মধ্যে নিহত ৬০৮ জন এবং আহত কমপক্ষে ১১০০ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৭২ জন ও শিশু ৮৪টি। ২৭১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২৬৪ জন, যা মোট নিহতের ৪৩.৪২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৩.৬৩ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় ১৪৩ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৩.৫১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৩ জন, অর্থাৎ ১২ শতাংশ। এই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, ২ জন আহত হয়েছেন। ২২টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৪টি (৩৪.৪৬%) জাতীয় মহাসড়কে, ২৬৫টি (৪২.৬৭%) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৬টি (১৫.৪৫%) গ্রামীণ সড়কে এবং ৪২টি (৬.৭৬%) শহরের সড়কে এবং চারটি (০.৬৪%) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন: দুর্ঘটনাসমূহের ১৩৩টি (২১.৪১%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৫৮টি (৪১.৫৪%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৪১টি (২২.৭০%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৭৫টি (১২.০৭%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৪টি (২.২৫%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন : দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রাম ট্রাক ২৯.৬৬%, যাত্রীবাহী বাস ১৪.৬২%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-অ্যাম্বুল্যান্স ৩.৭০%, মোটরসাইকেল ২৮.৭৩%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ১৪.১০%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-বোরাক-লাটাহাম্বা) ৪.৩২%, বাইসাইকেল-রিকশা ১.৬৪% এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩.১৯%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা : দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৯৭১টি। (বাস ১৪২, ট্রাক ১৯১, কাভার্ড ভ্যান ২৪, পিকআপ ২৬, ট্রাক্টর ১২, ট্রলি ১৮, লরি ৬, ড্রাম ট্রাক ১১, মাইক্রোবাস ১৯, প্রাইভেটকার ১৫, অ্যাম্বুল্যান্স ২, মোটরসাইকেল ২৭৯, থ্রি-হুইলার ১৩৭ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪২ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-বোরাক-লাটাহাম্বা), বাইসাইকেল-রিকশা ১৬ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩১টি।

দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ: সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৭.০৮%, সকালে ৩১.০৭%, দুপুরে ১৭.২৩%, বিকেলে ১৫.৪৫%, সন্ধ্যায় ৯.৯৮% এবং রাতে ১৯.১৬%।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান : দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৭.৬৯%, প্রাণহানি ২৬.৪৮%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৮১%, প্রাণহানি ১৭.৪৩%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫.৬১%, প্রাণহানি ১৫.৭৮%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.৫৬%, প্রাণহানি ১২.১৭%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৫%, প্রাণহানি ৪.৯৩%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৭৯%, প্রাণহানি ৬.২৫%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩.৩৬%, প্রাণহানি ১১% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.১৫%, প্রাণহানি ৫.৯২% ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৭২টি দুর্ঘটনায় ১৬১ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় ৪২টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম পঞ্চগড় জেলায়। এই জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ২৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top