মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান সবার ওপরে- এসপি বিপ্লব সরকার
রংপুর থেকে | প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২১, ২২:৩৬
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধকালীন শহীদ পরিবারের সদস্যবর্গের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান (২৬ মার্চ) সকাল ১১ টায় রংপুর টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ আসিফ আহসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর আইকন বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল নক্ষত্র রংপুর জেলা মানবিক পুলিশ সুপার, বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার) পিপিএম।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস দিবস ২৬ মার্চ। এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ৫০ বছরে পা দিলো স্বাধীন বাংলাদেশ।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি এই কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম লাভ করে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্র। স্বাধীনতা দিবস এই দিনটি বাঙালি জাতির সংগ্রামমুখর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
১৯৭১ সালের এই দিন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও পূর্ব বাংলার বাঙালির ওপর জেঁকে বসে নতুন জান্তা।
ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি জিন্নাহর ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ভারত থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান নামের একটি অসম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু থেকে বাঙালির জীবনে আবারও নেমে আসে শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের স্টিম রোলার।
ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে স্বাধীন হলেও এই ভূখণ্ডের বাঙালি আবার পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
তবে থেমে থাকেনি বাঙালি জাতি। ঔপনিবেশিক পাকিস্তানের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতি শুরু থেকেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামে। পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে ওঠে।
ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০- এর নির্বাচনসহ দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতি ৭১ সালে এসে উপনীত হয়।
অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন স্বাধীকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়। আর বাঙালির এ আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান।
পাকিস্তানের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের এক পর্যায়ে এ স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান।
ধারাবাহিক আন্দোলনকে স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর করে নিয়ে শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে তিনি ভূষিত হন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে।
অপরিসীম সাহস, দৃঢ়চেতা মনোভাব ও আপসহীন নেতৃত্ব দিয়ে বঙ্গন্ধু পরাধীন বাঙালি জাতিকে সংগ্রামী হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছিলেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স) বক্তব্যে বাঙালির মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে স্বাধীনতা অর্জনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মরণপণ সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিলেন তিনি।
৭ মার্চের ভাষণে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। আর পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী আলোচনার নামে প্রহসন চালাতে থাকে।
এর এক পর্যায়ে ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করে। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা।
এই গণহত্যা শুরু হওয়ার পরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। এই ঘোষণার বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ ।
এনএফ৭১/জেএস/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।