করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে
হচ্ছে না বারুনী স্নান উৎসব ও মেলা
গোপালগঞ্জ থেকে | প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩৬
দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়ী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা। দ্বিতীয় ধাপে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এ বারুনী স্নান উৎসব ও মেলা স্থগিত করা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
৯ এপ্রিল এ স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। গত ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ী ঘুরে যাবার পর থেকে স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার আশায় ছিলেন মতুয়া ভক্তরা।
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১২১৮ বঙ্গাব্দে ইংরেজি ১৮১১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। হরিচাঁদ ঠাকুরের বাল্য নাম ছিল হরি ঠাকুর। কিন্তু ভক্তরা তাকে হরিচাঁদ নামেই ডাকতেন। পিতা যশোবন্ত ঠাকুরের পাঁচ পুত্রের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় পুত্র। পরে পার্শ্ববর্তী ওড়াকান্দি গ্রাম বসতি গড়েন হরিচাঁদ ঠাকুর। সেখানে হরিচাঁদ ঠাকুর অলৌকিকত্ব ও লীলার জন্য প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠেন।
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ২১০ তম জন্ম তিথি উপলক্ষে আগামীকাল ৯ এপ্রিল ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে তিন দিনব্যাপী বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন দ্বিতীয়বারের মত বন্ধ করে দেয়ায় এ বছর ঢাক, ঢোল, ডঙ্কা, কাঁসি ও শিঙ্গার শব্দে মুখরিত হয়ে উঠবে না ঠাকুর বাড়ী।
প্রতিবছর বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটান, মধ্যপ্রাচ্যসহ লাখ-লাখ পূর্ণার্থীর আগমন ঘটে এ বারুণী স্নানোৎসব ও মেলায়।
ঠাকুর বাড়ীর সদস্য ও মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি শচীপতি ঠাকুর বলেন, করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এ বছর বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হবে না। পলৈ মতুয়া সম্প্রদায়ের ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। তরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হবে।
ঠাকুর বাড়ীর অপর সদস্য ও কাশিয়ানী উপজেলা চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল আগামী ৯ এপ্রিল। তবে বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত না হলেও যথারীতি শ্রীশ্রী হরি চাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রী গুরু ঠাকুরের মন্দিরে পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠিত হবে। যেহেতু এবছর বারুণী স্নানোৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হবে না সে কারণে ভক্তদের তিনি এখনে না আসার জন্য আহ্বান জানান। তবে অনেক ভক্ত প্রতিকূলতা পার করে ঠাকুর বাড়ীতে চলে আসেন। যদি কোন ভক্ত চলে আসনে তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে তারা স্নান করতে পারেন বলেও তিনি জানান।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ রায় বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রী পলিসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা আয়োজনের জন্য আমাদের কাছে কোন আবেদন করা হয়নি। এ বিষয় ঠাকুর বাড়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। করোনার কারনে তারা যদি এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা বন্ধ রাখেন এটা তাদের বিষয়।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: গোপালগঞ্জ
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।