আমতলীতে কলেরা স্যালাইন সংকট, সেবা দিতে দিশেহারা ডাক্তাররা
আমতলী থেকে জাহিদ খান রাসেল | প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২১, ০২:২২
বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ ডায়রিয়া রোগী বেড়ে যাওয়ায় কলেরা স্যালাইন (আইভী) ও হাসপাতালের শয্যা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি সরবরাহও সীমিত থাকায় বাহির থেকে উচ্চমূল্যে রোগীর স্বজনরা স্যালাইন সংগ্রহ করছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় আমতলী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে- হাসপাতালের নতুন ও পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার পুরোটা জায়গা জুড়ে ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি। পেশেন্ট ওয়ার্ড, কম্পাউন্ড, মেঝে, সিঁড়ির পাশে যে যেখানে জায়গা পেয়েছে সেখানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। পুরুষ, মহিলা ও শিশুরা অর্থাৎ সব বয়সী লোকেরাই আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।
ইমারজেন্সি ওয়ার্ডের ডিউটি ডাঃ এমদাদুল হক চৌধুরী (মেডিকেল অফিসার) তার সাথে কথা বলে জানতে পারি গত দু'দিন ধরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আজ সকাল থেকেই দুপুর ১২টার মধ্যে ২৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। গত দুদিনে এ পর্যন্ত ৮৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তিনি বলেন রোগীদের সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনিতেই করোনা সংকট তার উপর ডায়রিয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক রোগীই অভিযোগ দিয়ে বলেন - হাসপাতাল থেকে প্রথমে একটা স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী যা লাগবে তা আমাদের কিনতে হচ্ছে। কিন্তু এখন যা অবস্থা স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলও উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে।
রোগীদের অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে- হাসপাতাল গেট সংলগ্ন ফার্মেসিগুলোতে স্যালাইন চাইলে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। আমতলী মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিভ অ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন শিকদার বলেন- যোগানের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিগুলোর স্যালাইন দিতে পারছে না। আশাকরি দুই-একদিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়াও আমতলী কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন- গত কয়েকদিন ধরেই চাহিবামাত্র স্যালাইন পাচ্ছিনা। অধিকাংশ ফার্মেসিতে স্যালাইন নাই। রোগীর স্বজনরা স্যালাইন ছাড়াই ফিরে যাচ্ছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মোনায়েম সাদ বলেন- আমতলী ও তালতলীতে ডায়রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফলশ্রুতিতে আইভি স্যালাইন সংকট কিছুটা রয়েছে। বিগত বছরের হিসেব অনুযায়ী আমরা বছরের শুরুতে ৬৫০০ ইউনিট আইভী স্যালাইন আমতলী-তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য সংগ্রহ করি। হঠাৎ রোগী বেড়ে যাওয়ায় এবং অধিকাংশ রোগীকে একের অধিক স্যালাইন প্রয়োজন হওয়ায় স্যালাইনের সংকট দাঁড়িয়েছে। ডাঃ সাদ বলেন এখন আমাদের কাছে ১০০০ ইউনিটির মত স্যালাইন রয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সংকটের সমাধান হবে। এছাড়াও তিনি বলেন যেহেতু এটি পানি এবং খাবার বাহিত রোগ তাই খাবার-দাবারের ব্যাপারে সচেতন থাকতে জোর দিয়েছেন। নদী- খাল ও পুকুরের পানি আপাতত দৈনিক জীবন-যাপনে ব্যবহার না করতে বলেছেন।
এনএফ৭১/আরএইচ/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।