সাতক্ষীরার শিক্ষাদস্যু দুর্নীতিবাজ
অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা থেকে | প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৫৬
সাতক্ষীরার শিক্ষাদস্যু অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামনের দুর্নীতির মুলোৎপাটন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতেলেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন মোঃ মকছুদুর রহমান এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ২০০০ সালে সাতক্ষীরার বিনেরপোতায় নিজস্ব ১ একর জমির উপর পিতার নামে এডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজ প্রতিষ্ঠা করি।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান তালার মিঠাবাড়ী গ্রামের মৃত শেখ আব্দুল গণির ছেলে মোঃ আখতারুজ্জামান। কলেজে যোগদানের পরে সভাপতি পদ থেকে আমাকে বাদ দিয়ে যখন যার প্রয়োজন তাকে সভাপতি বানিয়ে শুরু করে তার অনিয়ম দুর্নীতির কার্যক্রম। তৎকালীন সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান ২০০৭ সালে সংরক্ষিত তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করে। আমি সভাপতি হওয়ার পর আদালতে মামলা করি। আখতারুজ্জামান তার স্ত্রী সেলিনা সুলতানার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ শেষ বর্ষের সনদ জালিয়াতি করে প্রভাষক পদে চাকুরী দিয়ে এমপিও করে সরকারি বেতন উত্তোলন করেছে।
নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে দীর্ঘ ৬মাস বিনা ছুটিতে কলেজে অনুপস্থিত থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। এসব অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর গৃহীত অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরত ও প্রয়োজনে মামলা করতে যশোর শিক্ষাবোর্ডকে নির্দেশনা প্রদান করেন। মকছুদুর রহমান বলেন, কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করতে গভর্নিং বর্ডির সভাপতিকে নির্দেশনা দিলে আমি আদালতে তার বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগে ফৌজদারী মামলা দায়ের করি।
২০১৪ সালে চার বৎসরের ভুয়া ছুটি নিয়ে কলেজে অনুপস্থিত থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করায় অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের বেতন বন্ধের সুপারিশ করেন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার হয়। বহিষ্কারের পর সে কলেজের প্যাড, সিল ব্যবহার করে ভুয়া স্মারক দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত দিচ্ছে। বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা হুমকি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে কলেজের অফিসে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে খুন জখমের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আখতারুজ্জামান বিভিন্ন সময়ে কলেজের স্নাতক স্তরের ২২জন শিক্ষক কর্মচারীর কাছ থেকে এমপিও ভুক্তির নামে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। আখতারুজ্জামান ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে বাণিজ্যিক ভাবে আরও ১৮টি কারিগরি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটিতে জাল সনদে অনেকে চাকুরী করে সরকারি বেতন নিচ্ছেন।
তিনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কলঙ্কযুক্ত করতে শিক্ষাদস্যু, দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উদ্ধত কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, গভর্নিং বডি বিদ্যোৎসাহী সদস্য মীম সাইফুল ইসলাম, সফরিকুল ইসলাম, দাতা সদস্য ফিরো রহমান, প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডলসহ অত্র কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: সাতক্ষীরা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।