‘ইউটিউবার’ মেয়েকে খুন করলেন বাবা!
নিজস্ব প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১৩:১৬
শ্বাসরোধের পর গুলি করে নিজের মেয়েকে খুন করলেন বাবা। নিহত ইউটিউবারের নাম টিবা আলি খান। ২২ বছর বয়সী তরুণী নিজের বাড়িতেই নির্মমভাবে খুন হন।
নিজের দৈনন্দিন জীবনের নানা মুহূর্ত তিনি ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে জানাতেন টিবা। ইদানীং ভক্তসংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছিল তাঁর।
ঝলমলে উচ্ছল মেজাজের মেয়ে টিবা। হাত নেড়েচেড়ে তাড়াহুড়ো করে নিজের ভাল থাকার কথা বলেন। হাজার হাজার অনুরাগী, অনুগামীকেও নিত্য ভাল থাকার রসদ জোগান, সেই মেয়ে না কি তাঁর পরিবারের ‘লজ্জার কারণ’ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন!
সম্প্রতি সেই মেয়েকেই নিজে হাতে খুন করে আলোচনার সৃষ্টি করলেন তাঁর বাবা। টিবার নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীজুড়ে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়ার শক্তিশালী ভূমিকম্পে লাশের মিছিল
ইরাকের মেয়ে টিবা। রক্ষণশীল সমাজে বড় হয়েছেন। পরিবারও রক্ষণশীল। সেই পরিবার থেকে বেরিয়ে ইউটিউবার তারকা হওয়ার জন্য অনেক লড়াই করতে হয়েছিল তাঁকে। নিজের বাড়িতে তো বটেই, নিজের দেশও ছেড়েছিলেন টিবা। থাকতেন তুরস্কে। সঙ্গে থাকতেন তাঁর প্রেমিকও। তিনি সিরীয় বংশোদ্ভূত। ইউটিউবেই নিজেদের বাগদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন টিবা।
সম্প্রতি তুরস্ক থেকে ইরাকে নিজের বাড়ি ফিরেছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এসেছিলেন বাবা-মায়ের কাছে। তবে টিবা বাড়িতে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। অশান্তি মেটাতে পুলিশকেও আসতে হয়েছিল বাড়িতে। ইরাকের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সাদ মানও সে কথা জানিয়েছেন। একটি বিবৃতি দিয়ে সাদ বলেছেন, ‘‘টিবা আলি এবং তাঁর আত্মীয়দের সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ।’’ কিন্তু সেই সমাধানসূত্র যে কোনো কাজেই দেয়নি তা স্পষ্ট হয়ে যায় গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে টিবার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি রাতে মেয়েকে ঘুমের মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুন করেন তাঁর বাবা। তারপর গুলিও করেন। তবে খুন করার পর তা গোপন করেননি টিবার বাবা।
পুলিশ জানিয়েছে, টিবার বাবা নিজেই এসে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, খুন তিনিই করেছেন। কেন খুন করেছেন, তার কারণও জানান। ইউটিউবার টিবার বাবা প্রকাশ্যেই খুনের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘লজ্জা ধুয়ে ফেললাম।’’
টিবার বাবা তাঁর স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, তিনি পরিবারের সম্মানরক্ষায় হত্যা করেছেন মেয়েকে। ইউটিউবারকে হত্যার অপরাধে যদি বা তিনি শাস্তি পান, তবে সেই শাস্তিও কম হবে। কারণ ইরাকে সম্মানরক্ষায় কোনো অপরাধ করলে অপরাধীকে কম সাজা দেওয়া হয়! আইনের ধারা জেনে নিয়েই নিজের মেয়েকে হত্যা করেছেন টিবার বাবা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।