লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের ১৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ১৫:২৮

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মালিকানাধীন লন্ডনে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা) মূল্যের বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। শুক্রবার (২৩ মে) গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাজ্য সরকারকে বাংলাদেশে পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতির সম্পদ উদ্ধার সহযোগিতার জন্য দেশটির চাপের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এনসিএ মোট নয়টি সম্পত্তির বিরুদ্ধে ফ্রিজিং অর্ডার জারি করেছে, যার ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখন আর এসব সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। এই দুই ব্যক্তি হলেন আহমেদ শায়ান রহমান ও তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমান। তারা উভয়েই শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহচর ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের পুত্র ও ভ্রাতুষ্পুত্র।
দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেখ হাসিনার মিত্রদের যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ রয়েছে, যার অংশ হিসেবে নয়টি সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।
এগুলো ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, আইল অব ম্যান ও জার্সির মতো অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছিল এবং প্রতি সম্পত্তির মূল্য ১২ লাখ থেকে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড পর্যন্ত।
শায়ান ও শাহরিয়ার রহমান হলেন ধনকুবের সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজা। সালমান ছিলেন শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের সময় দেশত্যাগের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলছে।
এনসিএ জানিয়েছে, ঘটনাটি চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ এবং তারা আরও সম্পত্তি জব্দের বিষয়ে কাজ করছে।
জব্দ সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনসে অবস্থিত একটি বাড়ি। সেখানে শেখ হাসিনার বোন ও সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা বসবাস করেছেন বলে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এই সম্পত্তির দাম ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড।
এনসিএ এক বিবৃতিতে জানায়, এটি একটি চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ হিসেবে বেশ কিছু সম্পত্তির বিরুদ্ধে ফ্রিজিং অর্ডার জারি করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের তদন্তে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ও সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। যদিও তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সালমান এফ রহমানের প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট সাম্রাজ্য বেক্সিমকো ও রহমান পরিবারের পক্ষে কোনো আইনজীবী মন্তব্য করেননি। তবে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে এক বিবৃতিতে আহমেদ শায়ান রহমানের পক্ষে জানানো হয়, ‘আমাদের মক্কেল যেকোনো ধরনের অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেন এবং যুক্তরাজ্যে যে কোনো তদন্তে তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে এবং শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষের উচিত এটি বিবেচনায় নেওয়া।’
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।