প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতি: ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নথি বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে তার (প্রধানমন্ত্রীর) সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তরিকুল ইসলাম মমিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আসামীরা হলো- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) তরিকুল ইসলাম মমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারী ফাতেমা খাতুন, নাজিম উদ্দীন, রুবেল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরহাদ হোসেন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদ।
এদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদ পলাতক রয়েছেন। বাকিদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সার সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি−গোপনীয় এ তথ্য ফোনে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে জানিয়ে দেন।
গত ১ মার্চ তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ৪ নং গেটের সামনে ফরহাদের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। এ জন্য ফাতেমাকে ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা দেয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন এবং অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশেও ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেয়। এরপর
গত ৩ মার্চ তারিখে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।নথি জালিয়াতির এই ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত ৫ মে তরিকুল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা ও ফরহাদ নামে তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এনএফ৭১/এমকে/২০২০
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।