জেমস: যার সুরের মূর্ছনায় বুঁদ হয়ে থাকেন সংগীতপ্রেমীরা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৪৪
ভক্তদের কাছে তিনি গুরু। অনেকের কাছে তিনি নগর বাউল। তার ভারি কণ্ঠে মাতোয়ারা সব বয়সের সংগীতপ্রেমীরা। তার কনসার্ট মানে আলাদা এক উদ্দীপনা, প্রাণোচ্ছ্বলতা। কথা ও সুরের এক অনন্য মিশেল। অনেকের মতে, বাংলা গানের সত্যিকার অর্থের সুপারস্টার তিনি। সহজে যার নাগাল পাওয়া যায় না, কেবল তার কাজে মুগ্ধতা নিয়ে ডুবে থাকা যায়।
বলছি উপমহাদেশের প্রখ্যাত রকস্টার জেমসের কথা। পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস। দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নগর বাউল জেমস নামেই তার অধিক পরিচিতি। আজ এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন। ১৯৬৪ সালে ২ অক্টোবর নওগাঁয় তার জন্ম। কিন্তু ছোটবেলা কেটেছে চট্টগামে। সেখানেই পরিবারের দ্বিমতে শুরু করেন সংগীতচর্চা।
জেমসের জীবন বেশ বাঁক বদলের, অনেক গল্পের। তবে স্বপ্নের জলাঞ্জলি দিতে নারাজ ছিলেন তিনি। তাই গানের জন্য ছেড়ে দেন ঘরই। গিয়ে ওঠেন চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে। সেখানেই তার গানের জগৎ প্রসারিত হয়। হয়ে ওঠেন নগর বাউল। ১৯৮০ সালের দিকে চট্টগ্রামে এই ব্যান্ড গড়েন তিনি।
ভালো কিছু করার তাড়নায় জেমস একসময় ছাড়েন প্রিয় চট্টগ্রাম। আশির দশকের মাঝামাঝি চলে আসেন ঢাকায়। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম স্টেশন রোড প্রকাশ পায়। পরে ১৯৮৮ সালে অনন্যা নামের অ্যালবাম রিলিজ করে সুপারহিট হয়ে যান জেমস। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেও সফল হয়েছেন তিনি।
সংগীত তাকে দিয়েছে দুহাত ভরে। একটা সময় গান দিয়ে জনপ্রিয়তা, খ্যাতি সবই আসে তার। এমনকি দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে যায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। ২০০৫ সালে উপমহাদেশের বৃহত্তম সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বলিউডে ডাক পান। সেখানে গান করেও নিজেকে প্রমাণ করেন। তার কণ্ঠে হিন্দি গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
জেমস বলেছিলেন, বলিউডে তখন ক্যারিয়ার গড়তে পারতাম। খুব সহজ ছিল। কিন্তু সেখানে স্থায়ী হলে আমাকে বাংলাদেশটা ছাড়তে হতো। যেটা আমাকে দিয়ে সম্ভব নয়। আরও বড় প্রলোভন দিলেও দেশ আমি ছাড়তে প্রস্তুত নই। তাই আর বলিউডে কন্টিনিউ করা হয়নি।
সৃষ্টির প্রতি নৈবেদ্য এবং ফটোগ্রাফির প্রতি ভালোবাসা বার বার রক তারকার খ্যাতির আড়ালে তার আপামর মানুষের শিল্পী পরিচয়কেই সামনে এনেছে।
নিজের ফেলে আসা জীবনকে জেমস কীভাবে দেখেন? জেমস বললেন, ঘুরে তাকানোর মতো সময় নেই। আরও অনেক কাজ করতে চাই। তবে হ্যাঁ, কোনো একসময় নিশ্চয়ই এই চলার পথে একবার ঘুরে দেখব জীবনটাকে। যে জার্নিটা করেছি, চলার পথের স্ট্রাগল ফিরে দেখতে চাই। নাইট ক্লাবে গাইতাম, আবার বিয়ের অনুষ্ঠানেও গাইতে হতো। এই এক জীবনে সবই আনন্দের সঙ্গে করেছি।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।