বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মহাকালের ধারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এই বিশাল স্থাপনা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়াম, এক আশ্চর্য বিস্ময়

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২২, ০২:০২

ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়াম

পৃথিবীর সকল কবি, সাহিত্যিক আর শিল্পীকে যদি প্রশ্ন করা হয়, কোন দেশে প্রথমে ভ্রমণ করতে চান, তাদের কাছ থেকে সোজা উত্তর আসবে একটিই- সেটি হলো ফ্রান্স ।

দেশটির রাজধানী প্যারিসের নাম শুনলেই যেনও ভ্রমণ পিপাসুদের মনের গহীন কোণে মৃদু নাড়া দিয়ে যায়, চোখে জেগে ওঠে নানান রঙ্গের ছবি।

পৃথিবীতে যত স্থাপত্য কলা আছে তার মধ্যে যদি পাঁচটিকে প্রথম সারিতে রাখতে বলা হয় শুধুমাত্র এদের মান এবং সৌন্দর্যের কারণে তাহলে তাদের একটা হবে প্যারিসের ল্যুভ মিউজিয়াম।

বলা হয়ে থাকে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়াম এক আশ্চর্যজনক বিস্ময়।

সিটি অব রোমান্স নামে খ্যাত প্যারিসের সীন নদীর তীর ঘেঁষে জাদুঘর ল্যুভরের অবস্থান। মহাকালের ধারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এই বিশাল স্থাপনা।

কাঁচের তৈরি পিরামিড দিয়ে নবরূপে নির্মিত ল্যুভর মিউজিয়াম এক সময় ফ্রান্সের রাজাদের দুর্গ ও পরে রাজ প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ল্যুভরের পুরো ভবনটিকে মিউজিয়াম রূপান্তর করতে প্রায় ২০০ বছর লেগেছিলো। ষোড়শ লুই ১০ আগষ্ট ১৭৯৩ সালে ৫৩৭ টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের মাধ্যমে ল্যুভর জাদুঘরের উদ্বোধন করেন। রাজা অষ্টাদশ লুইস ও রাজা দশম চার্লসের শাসনকালে জাদুঘরটির সংগ্রহ আরো বৃদ্ধি পায়।

প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ব্যতীত বিভিন্ন সময়ে দান ও উপহারের মাধ্যমে সংগ্রহ বাড়তে থাকে। বর্তমানে যা ৭২৭৩৫ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে ৩৮০০০ হাজার প্রাগৈতিহাসিক ও ঐতিহাসিক শিল্পকর্মের সংগ্রহশালা। বছরে প্রায় ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন পর্যটক কেবল এই মিউজিয়ামটি ভিজিট করে থাকেন।

ল্যুভর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি‘র জগত বিখ্যাত সেই চিত্রকর্ম “মোনালিসা” ধরিত্রী’র আরো এক তাজ্জব শিল্পকর্ম। মোনালিসা যেন ল্যুভরের ফ্লাস পয়েন্ট। সত্যিই ছবির চেয়েও সুন্দর এক সৃষ্টি। ল্যুভর যেমনি সৌন্দর্যের ধারক তেমনি ইতিহাসেরও বাহক। প্রাচীন সভ্যতার শুরু থেকে আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই সংরক্ষিত রয়েছে এখানে।

বিখ্যাত গ্লাস পিরামিডের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করা যাবে ল্যুভের বিশাল দালানের নিচে। জাদুঘরটিকে আটটি সংগ্রহশালা বিভক্ত করা হয়েছে, যথাক্রমেঃ মিশরীয় পুরাতত্ত্ব; নিকট প্রাচ্য পুরাতত্ত্ব; গ্রিক, এট্রাস্কান ও রোমান পুরাতত্ত্ব; ইসলামিক শিল্পকলা; ভাস্কর্য; সজ্জা সংক্রান্ত শিল্প; অঙ্কন শিল্প এবং ছাপা শিল্প।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিউজিয়াম ল্যুভের পুরোটা ঘুরে দেখতে সময় লাগে অন্তত চার দিন। এখানে আছে প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে উনিশ শতকের মধ্যভাগের ৩ লাখ আশি হাজার নিদর্শন, আটটি কিউরেটোরিয়ালে বিভক্ত ৩৫০০০ পেইন্টিং। ৬ লাখ ৫০ হাজার বর্গফুটের গ্যালারি জুড়ে হাঁটতে হাঁটতে আপনার পা ব্যাথা হবে ঠিকই কিন্তু দেখা শেষ হবে না।

আপনি প্যারিস গেছেন কিন্তু চোখ ধাঁধানো নিদর্শনের প্রাণকেন্দ্র ল্যুভ মিউজিয়াম দেখেননি তাহলে আপনার জীবনটাই বৃথা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top