বৃহঃস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

শেখ হাসিনার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০২৪, ১৮:২৩

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ফার্মগেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছুক তৌহিদুল হক নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামির তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুনতাসীর মামুন ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিঝুম মজুমদারও রয়েছেন।

বুধবার (২১ অগাস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে মামলাটির আবেদন করেন নিহতের বড় ভাই তারিকুল ইসলাম। পরে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তেজগাঁও থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, শাহজাহান খান, হাছান মাহমুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার কুমার সরকার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান প্রমুখ। গত ৪ আগস্ট তেজগাঁও থানা এলাকার ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজের নিচে সড়কে গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুক তৌহিদুল হক।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে ‘নির্বিচারে হত্যা ও লাশ গুম করে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে’র অভিযোগ করা হয়েছে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, গণজাগরণ মঞ্চের তৎকালীন মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ বিভিন্নজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে আবেদন করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী। আবেদনের সময় তার পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

গাজী এম এইচ তামিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, আবেদনে ঘটনার তারিখ হিসেবে ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে এবং স্থান হিসেবে মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান উল্লেখ করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূলের উদ্দেশে ১ থেকে ২৪ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্য আসামিরা শহরব্যাপী ‘ব্ল্যাক আউট’ করে টিভি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণে হত্যা, লাশ গুম করে গণহত্যা চালায় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।

অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।

অভিযুক্তের তালিকায় আরও আছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সদস্য মুনতাসীর মামুন ও তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, একাত্তর টিভির এমডি মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির এমডি আহমেদ জোবায়ের, এবি নিউজের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, বিজিবির সাবেক ডিজি ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সাবেক ডিজি এম মনজুর আহমেদসহ অজ্ঞাতপরিচয় কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও কতিপয় বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ সদস্য এবং তৎকালীন কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার নীতিনির্ধারক।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top