গণহত্যায় উসকানিদাতা হিসেবে যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৪৬
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) গুলিতে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৯৩ জন। নিহত শিক্ষার্থীর বাবা কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে নাম থাকা সাংবাদিকরা হলেন একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক-উপস্থাপক ফারজানা রুপা, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, একাত্তর টিভির সাবেক বার্তাপ্রধান সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের,এটিএন নিউজের সাবেক বার্তাপ্রধান মুন্নী সাহা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান। সূত্র: দেশরূপান্তর
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায়। অভিযুক্তের তালিকায় এবার শেখ হাসিনার সঙ্গে ২৯ জন সাংবাদিকসহ ৫৩ জনের নাম রয়েছে। কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনে আটক, নির্যাতন, গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। নিহত কলেজছাত্র নাসিব হাসান রিয়ানের (১৭) বাবা গোলাম রাজ্জাকের পক্ষে তাঁর আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম এই অভিযোগ করেন। মিরপুর বিসিআইসি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন রিয়ান।
অভিযুক্তরা হলেন- বাংলাদেশের সাবেক তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও আইনজীবী নিঝুম মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নইম নিজাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক ও টিভি সঞ্চালক নবনিতা চৌধুরী, এবি নিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, সময় টিভির সাবেক বার্তা প্রধান তুষার আবদুল্লাহ, ডিবিসির সম্পাদক জাহেদুল হাসান পিন্টু, ডিবিসির প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম ও চ্যানেল আইয়ের সোমা ইসলাম।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিন, একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রূপা, একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ, একাত্তর টিভির হেড ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের মিথিলা ফারজানা (মোবাশ্বিরা ফারজানা মিথিলা), ইন্ডপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীস সৈকত, এশিয়ান টিভির হেড অব নিউজ মানষ ঘোষ, ডিবিসির প্রনব শাহা, এটিএন নিউজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি শাহা, এটিএন বাংলার সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন (জাহিরুল ইসলাম মামুন), দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, ইত্তেফাকের শ্যামল সরকার, সমকালের অজয় দাশ। অভিযোগ আনা হয়েছে, একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু, সময় টিভির আহমেদ যোবায়ের, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সমকালের সাবেক সম্পাদক আবেদ খান, এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনের বিরুদ্ধেও।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আবেদনে বলা হয়েছে, এসব সাংবাদিক আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার দাবি ও আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা খবর প্রচার-প্রকাশ করেছেন। তা ছাড়া আন্দোলনে নিহতদের তথ্য গোপন করে গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছেন। আন্দোলন চলা অবস্থায় এসব সাংবাদিক শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তাঁর সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সূত্র: করতোয়া, কালের কণ্ঠ
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আক্কাস আলীকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আসামির তালিকায় আছেন ২১ সাংবাদিকও। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম। নিহতের ভাই আব্দুর রাজ্জাক মামলাটি করেন।
সাংবাদিকরা হলেন বাংলা টিভির নজরুল কবির, নিউজ২৪-এর রাহুল রাহা, ডিবিসির মঞ্জুরুল ইসলাম, কালের কণ্ঠের হায়দার আলী, দৈনিক কালবেলার আজমল হক ফরাজী, বাসসের স্বপন বসু, ভোরের কাগজের ইখতিয়ার উদ্দিন, যায়যায়দিনের অরুণ কুমার দে, বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবির, ডিইউজের নেতা খায়রুল আলম, ইউএনবির করিম ওয়াহিদ, নিউজ২৪-এর আশিকুর রহমান শ্রাবণ, ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ মুহম্মদ জামাল হোসাইন, সমকালের আবু সালেহ রনি, কালের কণ্ঠের সামনুনুল আলম তুষার, নিউজ২৪-এর জয়দেব দাস, সমকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, ডিবিসির জায়েদুল আহসান পিন্টু, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন। সূত্র: খবরের কাগজ
গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের দিন রাজধানীর মিরপুরে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলি করে মো. ফজলু হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ২৫ সাংবাদিকসহ ১৬৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। ভাসানটেকের দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে বিজয় মিছিলে গুলি চালালে নিহত হন ৩১ বছর বয়সী ফজলু। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) নিহতের বড় ভাই মো. সবুজ ঢাকার ভাষানটেক থানায় এ মামলা করেন। ভাষানটেক থানার ওসি ফয়সাল আহমেদ মামলার তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলায় সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন- নঈম নিজাম, মনজুরুল আহসান বুলবুল, শ্যামল দত্ত, ফরিদা ইয়াসমিন, ওমর ফারুক, মনজুরুল বারী নয়ন, সোহেল হায়দার চৌধুরী, কুদ্দুস আফ্রাদ, অরুন কুমার দে, জিহাদুর রহমান জিহাদ, আব্দুল মজিদ, সাজ্জাদ আলম খান তপু, সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, হায়দার আলী, আলমগীর হোসেন, মাইনুল আলম, জায়েদুল আহসান পিন্টু, কবির আহমেদ খান, নুরুল ইসলাম হাসিব, শাহনাজ শারমিন। সূত্র: ইত্তেফাক
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।