বন্ধু ছাড়া সরকারের ক্ষমতায় থাকা কঠিন

বন্দুক-পিস্তল ছাড়া এই সরকারের টিকে থাকা কঠিন: ফখরুল

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:২৬

বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার নতজানু তাই বন্ধুদের সমর্থন ছাড়া এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন। তারা চাইবে, আগামী নির্বাচনের আগে সেখান থেকে কিছু পাওয়া যায় কিনা।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) শেরে-বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে আজ মাজারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিবার ভারতে যাওয়ার আগে অনেক আশা দিয়ে যান। তিস্তা চুক্তি হবে, ওই হবে, সেই হবে। কিন্তু এর কোনোটাই হয় না। এই বিষয়গুলো নির্ভর করে জনগণের শক্তির ওপর। জনগণ সরকারকে সমর্থন করলে, এগুলো করা সম্ভব।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি- এই সরকার জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। তাই বহির্বিশ্বে দেশের স্বার্থ রক্ষা করার কোনো চুক্তি তাদের পক্ষে এক প্রকার দুরূহ কাজ। সেটা আমরা লক্ষ্য করেছি মিয়ানমারের ক্ষেত্রে। মিয়ানমার বারবার বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ভেতরে প্রবেশ করে গোলা মারছে, কিন্তু এই নতজানু সরকার একটি প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। একইভাবে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন সমস্যা, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ অন্যান্য যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো এই সরকার সমাধান করতে পারেনি। কারণ তাদের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনো কথা বলতে চাই না। আমরা এই কমিশন মানি না। এই নির্বাচন কমিশন গঠনই হয়েছে অবৈধ ও বেআইনিভাবে। আমরা বলেছি- এই কমিশন দিয়ে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ না হলে, অতীতে যে হাল হয়েছে এবারও তাই হবে। তারা কখনো অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। সেই কারণে এই নির্বাচন কমিশনার কী বললেন, আর না বললেন তাতে বিএনপির বা জনগণের কিছু যায় আসে না।

তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য একটাই- এই অবৈধ সরকারকে সরিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যাসহ অন্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলোর সমাধানও বাংলাদেশ সরকার করতে পারেনি। কারণ, এই সরকারের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই। এই সমস্যা সমাধানের শক্তি এই সরকারের নেই। শেখ হাসিনা প্রত্যেকবার আমাদের অনেক আশা দিয়ে গেছেন, তিস্তা চুক্তি সই অমুক হবে তমুক হবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনোটাই হয়নি। উনি ফিরে আসুক, কী কী আনছেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য সেটাই হবে এই সফরের সাফল্য।

ভারতে প্রধানমন্ত্রীর অভ্যর্থনা ও সফর থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাদ পড়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগে যে বক্তব্য দিল এবং সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীদের যে বক্তব্য তাতে স্পষ্ট যে তারা যেভাবেই রিসিভ করুক তারা যাবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে গণতন্ত্র ছিল কিন্তু এই আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। তারা প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। তারা বিরোধীপক্ষকে হত্যা করছে। এই সরকারের সমর্থনে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আসবে, তা আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের বিশ্বাস, সমস্ত গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই দেশের জনগণের গণতন্ত্রের জন্য যে সংগ্রাম তাকে সমর্থন করবে।

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top