উপকূলীয় ১৩ জেলায় কখন মারাত্মক আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, জানালেন দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২২, ০৫:০৯
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, এই ঝড় উপকূলীয় ১৩ জেলায় মারাত্মক এবং দুই জেলায় হালকাভাবে আঘাত হানবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে বরগুনার পাথরঘাটা ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে আজ সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
এনামুর রহমান জানান, সিত্রাং সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশে আঘাত হানবে। ভারতে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এটি আঘাত হানবে। আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে অতিক্রম করবে উপকূল। মূল আঘাত হানবে বরগুনা সদর, পাথরঘাটা এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়।
১৩টি জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী এবং ফেনীতে সিত্রাং মারাত্মক আঘাত হানবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় এটি আঘাত হানবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চলগুলো বিশেষ করে মহেশখালী, সন্দীপ এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ আছে। এসব অঞ্চলে লোক সরানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
এনামুর রহমান বলেন, ৭ হাজার ৩০টি শেল্টার করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে আনা হচ্ছে। সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড একসঙ্গে কাজ করছে। ১৫ জেলায় ২৫ লাখ লোককে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে। প্রতিটি জেলায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শেল্টারগুলোতে শুকনো ও রান্না খাবারের ব্যবস্থা থাকবে।
এরআগে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছানাউল হক মণ্ডল। সিত্রাংকে মাঝারি আকারের সাইক্লোন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সিত্রাং মঙ্গলবার ভোর কিংবা সকালের মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং যেহেতু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হচ্ছে তাই ঘূর্ণিঝড়-কেন্দ্রে নিম্নচাপের কারণে ওই স্থানের পানির সমতল উঁচু হয়ে যাচ্ছে। ওই স্থান থেকে সমুদ্রের পানি চট্টগ্রাম উপকূলে জমা হচ্ছে। চট্টগ্রাম উপকূলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বলছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।