• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


সাংবাদিকদের হৃদয় বড় হয়

প্রেমিক-প্রেমিকা হিসাবে সাংবাদিকরাই সেরা, জানেন কেন?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০২৩, ০৩:৪১

প্রিয় সাংবাদিক

প্রেমিক হিসেবে সাংবাদিকরা আসলে কেমন? এমন প্রশ্নে অনেকেই আঁতকে উঠতে পারেন, ভাবতে পারেন সাংবাদিক মানেই বিপদজনক। আসলে এটা ভুল, সাংবাদিকরা সঙ্গী হিসেবে অসাধারণ হয়ে থাকে। দেশ ও দশের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একজন সাংবাদিক তার সঙ্গীর প্রতিও থাকে বিশ্বস্ত।

সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেম করা নাকি বেশ কঠিন। সাংবাদিক মাত্রই নাকি হামবড়িয়া ভাব থাকে। সবসময় জ্ঞান জাহির করার চেষ্টা করে। এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলেও ঝকমারি। তাই সাংবাদিকদের স্বামী বা স্ত্রীরা সবসময় অন্যকে বলেন, আর যে পেশার মানুষকে বিয়ে কর, সাংবাদিককে নয়। তারা নাকি সব সময়ই বড্ড বেশি কাজ নিয়েই মেতে থাকে।

আরও পড়ুন>>>সন্তান ধারণ ও লালন-পালন করা একটি শিল্পের কাজ: ম্যাডোনা

কিন্তু এই অভিযোগ কি আদতেও সত্যি? একটু স্থির হয়ে ভেবে দেখুন তো? সাংবাদিক জীবনসঙ্গী পেলে কিন্তু আখেরে লাভ আপনারই। এক বা দু’টো নয়, এর পিছনে রয়েছে অনেক কারণ।

সমীক্ষা বলছে, অন্য যে কোনও পেশার মানুষের চেয়ে সাংবাদিকরা প্রেমিক বা প্রেমিকা হিসেবে অনেক এগিয়ে। কারণ পেশার খাতিরে সাংবাদিকরা এমনিতেই চরকার মতো ঘুরতে থাকেন। শহরের অলিগলিতে কোথায় কী আছে- সবই তাদের নখদর্পণে। কোনও জায়গার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে তাদের ঠোঁটস্থ থাকে উত্তর। তার উপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে কোথায় কী বলতে হবে, কোথায় কীভাবে থাকতে হবে, তা নিয়ে সম্যক ধারণা তৈরি হয়ে যায়। ফলে যেখানেই আপনি তাকে নিয়ে যান না কেন, অস্বস্তিতে তো পড়বেনই না, উলটে সাংবাদিক সঙ্গী থাকলে আপনার মর্যাদাও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। আর এ কারণেই তাদের সঙ্গে প্রেম মানে জীবনে আনন্দ আর ফুর্তির প্রাচুর্য্য।

অনেকের অভিযোগ, সাংবাদিকতার পেশায় সম্মান আছে কিন্তু টাকা নেই। এই পেশার লোকদের পকেট নাকি সব সময়ই খালি। আর অন্য অনেক পেশার তুলনায় সাংবাদিকদের পারিশ্রমিক নাকি বেশ কম। স্রেফ নেশার তাগিদেই সংবাদ সন্ধানে ছুটে যায় তারা। টাকাটা তাদের কাছে বড় ব্যাপার নয়। এমন কি তারা কাজের প্রতি অনেক বেশি নিবেদিত থাকেন। সবার ছুটি থাকলেও তাদের ছুটি মেলে কম। যে কারণে প্রিয়জন এবং পরিজনদের সময়ও দিতে পারে না। জেনেশুনে এমন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর সাহস ক’জনেরই বা থাকে বলুন!

আসলে কি জানেন, তাদের কাজের প্রতি অনুরাগই তাদের চালিত করে, অর্থ নয়। যদি এটি অর্থ তৈরির বিষয়ে হতো, তবে তারা এই পেশায় থাকতো না। তারা তাদের পরিশ্রমের হিসাবে ততটা উপার্জন নাও করতে পারে, তবে তারা সময়কে বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারে।

সাংসারিক জীবনেও এই মনোভাব কাজ করে। ফলে স্বামী বা স্ত্রীর আয় নিয়ে এদের কোনও মোহ থাকে না। এমন সঙ্গী পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। তার উপর সাংবাদিকদের পেশার তাগিদে খাটতে হয় প্রচুর। ইচ্ছা-অনিচ্ছার উর্ধ্বে গিয়ে কিংবা পরিস্থিতির চাপে পড়ে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে ওঠেন তারা। সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি পরিশ্রমী হয়, তবেতো সবারই লাভ। তার উপর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক না গলানোর মতো সময়ই থাকে না তাদের।

সাংবাদিকরা অনেকটা কাঁঠালি কলার মতো। চাই বা না চাই কয়েক গুচ্ছ কাজ তাদের শিখে রাখতেই হয়, যাকে বলে ‘বাই ডি ফল্ট মাল্টিটাস্কিং’। এক সঙ্গে অনেক কাজ তাদের অভ্যাস হয়ে যায়। বাড়িতে এমন একজন মাল্টিটাস্কিং পার্টনার কে না চায় বলুন?

সাংবাদিকরা চান বা না চান, অনেক রকম কাজ তাদের শিখতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো সাংসারিক জীবনেও উপকারে লাগে। এছাড়া পেশার খাতিরে তাদের পড়াশোনাও করতে হয় প্রচুর। তাই যে কোনও বিষয়ের উপর মোটামুটি জ্ঞান তাদের থাকে। এখানে সুবিধা দু’টি। একতো আপনি কোনও বিষয় না জানলে সঙ্গীর থেকে জেনে নিতে পারবেন। কোথায় কখন কী কাজে লেগে যায়, বলা তো যায় না। আর দ্বিতীয়ত, আপনি কোনও বিষয়ে আলোচনা করার মতো লোক পেয়ে যাবেন। এছাড়া পেশার খাতিরেই বিশ্বাসী হন সাংবাদিকরা। সংবাদ উৎস সবসময় গোপন রাখতে হয় তাদের। এটা ব্যক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলে বেশি।

জেনে নিন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করার ইতিবাচক দিক-

১. অনেকে মনে করেন, সাংবাদিকেরা নিস্তেজ, অসামাজিক এবং আত্মপ্রেমেই মগ্ন থাকে। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। তারা শহরের সবচেয়ে আনন্দদায়ক পার্টিতে, সিনেমার প্রিমিয়ারে যেতে পারে; সেরা রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে পারে। এমন মানুষের সঙ্গী হতে কে না চাইবে!

২. একজন সাংবাদিককে অবশ্যই সৃজনশীল হতে হয়। নিজের পেশা ছাড়াও আরো অনেক কিছুতেই পারদর্শী হন। জ্ঞানপূর্ণ এবং আকর্ষক গল্পগুলো তারা পাঠকের সামনে উপস্থাপন করে যা কিনা নিউজরুমের সীমার বাইরেও প্রসারিত হয়। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করার অন্যতম সুবিধা হলো সে আপনাকে সবচেয়ে স্নিগ্ধ উপায়ে মুগ্ধ করতে পারবে। এমনকী তার দেওয়া কষ্ট কিংবা অবহেলাও হবে একইরকম সৃজনশীল! পার্টনার যদি সৃজনশীল হন, তা হলে গর্বে বুকের ছাতি ইঞ্চি খানেক বাড়ে বৈকি!

৩. সাংবাদিকরা বোকা এবং স্মার্টনেসের একটি নিখুঁত মিশ্রণ। বিশ্বের চারপাশে যা ঘটছে তার খোঁজ তারা স্বাভাবিকভাবেই রাখে। তাদের সঙ্গে কথোপকথন আকর্ষণীয়। কথা চালিয়ে গেলে তা আপনাকেও জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করবে, তাদের সঙ্গে কথা অবিরাম কথা বললেও আপনি বিরক্ত হবেন না। কারণ তারা যেকোনো বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে।

৪. তাদের কাজের প্রতি অনুরাগই তাদের চালিত করে, অর্থ নয়। যদি এটি অর্থ তৈরির বিষয়ে হতো, তবে তারা এই পেশায় থাকতো না। তারা তাদের পরিশ্রমের হিসাবে ততটা উপার্জন নাও করতে পারে, তবে তারা সময়কে বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারে।

৫. অগণিত উৎস, সময়সীমা এবং ভীষণ চাপের পরিবেশে কাজ করা তাদের অন্যতম দক্ষতা। সাংবাদিকরা মাল্টিটাস্কিংয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা তাদের কাজ এবং তাদের সম্পর্কের মধ্যে পুরোপুরি ভারসাম্য রাখতে পারে। তারা সারাদিনের পরিশ্রমের পরেও সঙ্গীকে ভালোবাসা এবং যত্ন দিতে পিছপা হয় না।

৬. সাংবাদিকদের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। তারা আপনাকে এক মিলিয়ন প্রশ্ন দিয়ে অতিষ্ঠ করবে না বা আপনি কীভাবে আপনার দিনের প্রতিটি মিনিট কাটিয়েছেন তা জানার দাবি করবে না। তারা আপনাকে স্পেস দেবে এবং বিনিময়ে একই আশা করবে।

৭. সাংবাদিক হওয়া সহজ নয়। এটি কঠোর পরিশ্রম এবং নিঃশর্ত অধ্যবসায় দ্বারা ভারাক্রান্ত একটি জীবন। পিআর- এর সঙ্গে কাজ করা থেকে শুরু করে খবরের উৎসের পেছনে দৌড়ানো, কোনোটিই সহজ নয়। তারা ঠিক জানে যে কোনোকিছু সঠিকভাবে পেতে এবং কার্যকর করতে কী লাগে; এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও একই আচরণ আশা করে।

৮. সাংবাদিকদের সবসময় মজার মজার গল্প থাকে। তারাও কিন্তু দারুণ শ্রোতা, তারা সত্যিকার অর্থে আপনার প্রতি আগ্রহ দেখাবে। তারা আপনার করা সামান্য ইঙ্গিতও ধরে ফেলতে পারদর্শী।

৯. সাংবাদিকরা প্রয়োজনে অন্যকে সাহায্য করার জন্য নিজের সামর্থ্যের বাইরেও যায়। এক্ষেত্রে অপরিচিত কেউ হলেও কোনো ব্যাপার না। তারা তাদের প্রচেষ্টায় কোনো ঘাটতি রাখে না। এটা বলাই যায় যে, সাংবাদিকদের হৃদয় বড় হয়।

১০. আপনার প্রিয় খেলা, কনসার্ট বা একটি শিল্প ইভেন্টে যোগ দিতে চান? আপনার ইচ্ছা হলেই তাকে জানান। কয়েকটি ফোনকলের মাধ্যমে কয়েক মিনিটের মধ্যেই টিকিট পেয়ে যাবেন!

১১. সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলুন। দেখবেন, জানা থাকুক বা না থাকুক আলপিন থেকে আলাস্কা, সব কিছু নিয়েই তারা নাতি দীর্ঘ বক্তব্য দিতে পারেন। ফলে যখন কোনো কাজ থাকবে না, একঘেয়ে লাগবে। তাদের সঙ্গে আরামে বকবক করতে পারেন।

১২. খবর সন্ধানের তাগিদে এর, ওর, তার থেকে এতো এটা, ওটা, সেটা শুনতে হয়, সাংবাদিকরা আপসেই ভাল শ্রোতা হয়ে ওঠেন। প্রেমিক বা প্রেমিকা যদি ভাল শ্রোতা হল, তার থেকে ভাল আর কী-ই বা হতে পারে?

১৩. পেশার খাতিরেই বিশ্বাসী হয়ে থাকেন সাংবাদিকরা। সংবাদের জন্য অনেক লোকজনের কাছে যেতে হয় তাদের। সংবাদ উৎসের পরিচয় গোপন রাখতে হয়। আর এ কারণেই বিশ্বাসী আর সহায়তাপ্রবণ হয় সাংবাদিকরা। জীবনে এমন একজন মানুষ কে না চায়? নিশ্চিন্ত থাকুন, আপনি যদি একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করেন তবে আপনার বিশ্বাস ভঙ্গ হবে না এবং আপনার গোপনীয়তা সব সময় নিরাপদ থাকবে।

১৪. এই পেশাতে থাকার অর্থই হচ্ছে বেঁধে দেওয়া সময়ের বাইরে গিয়েও কাজ করতে হয়। এমনিতেই তাদের এমন গাধার খাটুনি খাটতে হয়। সাংবাদিকরা ইচ্ছা-অনিচ্ছার উর্ধ্বে গিয়ে বাই ডি ফল্ট কঠোর পরিশ্রমী হয়ে ওঠেন। সঙ্গী বা সঙ্গিনী পরিশ্রমী হওয়া যে কারো পক্ষেই অত্যন্ত সুখকর।

১৫. সারাটা দিন এর ওর সঙ্গে খেজুরে ভদ্রতা করতে গিয়ে এমন হাসিটা দিতে হয়, সেই হাসিটাই সাংবাদিকদের কেমন অভ্যাস হয়ে যায়। সব সময় গোমড়া মুখ করে বসে থাকে এমন না হয়ে একজন হাসিখুশি মানুষই কি সবার চাওয়ায় থাকে না?

তাই সাংবাদিকরা প্রেমিক হিসেবে ভাল নয়- এমন ধারণা থেকে বের হয়ে এসে এবার কিন্তু আপনি একজন সাংবাদিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নিতেই পারেন!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top