সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার মামলায় সাবেক এমপি আরজু কারাগারে

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৭:২১

খন্দকার আজিজুল হক আরজু

প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেছেন খন্দকার আজিজুল হক আরজু। এ অভিযোগের মামলায় পাবনা-২ আসনের সরকারদলীয় এই সাবেক সাংসদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহারের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আরজু। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরআগে, ১৬ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। একই আদালত পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ পরোয়ানা জারি করেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে এক নারী এ মামলা করেন। তিনি একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী। আদালত তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই গত ৫ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বাদীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সে সময় তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন এবং নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। তার আত্মীয়-স্বজনরা তাকে আবারও বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষ দিকে চাচার মাধ্যমে খন্দকার আজিজুল হক আরজুর সঙ্গে বাদীর পরিচয় হয়।

পরে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। সন্তান গর্ভে আসার পর নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন আরজু। কিন্তু বাদীর দৃঢ়তায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আরজুর আচার-আচরণে পরিবর্তন আসে, তিনি বাসায় আসা কমিয়ে দেন।

আরজু বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বললে তার বাবা ১৮ লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দিলেও আসামি কোনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি। একপর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে খোঁজ নিয়ে বাদীপক্ষ জানতে পারেন আরজুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। সেখানে এক কন্যাসন্তান আছে। নিজের নাম ফারুক হোসেন বললেও আসলে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু।

মিথ্যা তথ্য ও পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বাদীকে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এরপর আসামি কয়েকবার নিজে ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দ্বারা তাকে হত্যা করার উদ্দেশে আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে আসামি বাদীর সাথে বিবাহ, গর্ভপাত ও ঔরসের কন্যার পিতৃ পরিচয়কেই সরাসরি অস্বীকার করেন। বাদীর কন্যা সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে তদন্তে এসেছে, কন্যা সন্তানটি বাদীর গর্ভজাত ও আসামি আজিজুল হক আরজু তার জৈবিক পিতা।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top