শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে সক্ষমতা বাড়বে প্রায় আড়াই গুণ
মনির হোসেন জীবন | প্রকাশিত: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪:৫৫
দেশের সবচেয়ে বড় আধুনিক ও নন্দিত বিমানবন্দর হল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম আগামী বছর থেকে চালু হলে এর সক্ষমতা বাড়বে প্রায় আড়াই গুণ। খবর একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রের।
বিমানবন্দর সূত্র জানান, বর্তমানে বিমানবন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্গো টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শেষ মুহুর্তে অল্প কিছু কাজ বাকি আছে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে তা চালু হবার সম্ভবনা রয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দেশের সব চেয়ে বড় এই আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন।
বেবিচকের এক কর্মকর্তারা নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমের এই প্রতিবেদককে জানান, এশিয়ার মহাদেশের মধ্যে নন্দিত সর্ব বৃহৎ নতুন এই টার্মিনালটি পুরোপুরি ভাবে চালু হলে শাহজালাল বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়বে প্রায় দুই থেকেন আড়াই গুণ। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির কাজের সবশেষ অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ।
তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা করপোরেশন এবং কোরিয়ার স্যামসাংয়ের জয়েন্ট ভেঞ্চার ‘এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম’ তৃতীয় টার্মিনালের ‘সফট ওপেনিং’ করেন।
তৃতীয় টার্মিনালে কী সুবিধা আছে : বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন এই টার্মিনালে থাকবে বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা ও যাত্রীসেবা। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, তৃতীয় এই টার্মিনালের প্রায় ৯৮ শতাংশ কাজই প্রায় শেষ। টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম আগামী বছরের শেষ দিকে চালানো সম্ভব হবে।
বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, বিমানবন্দরে টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ। বাকি তহবিলের জোগানদাতা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। টার্মিনালটির নকশা করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ও ব্যস্ততম হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নকশাকার রোহানি বাহারিন।
সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরের দু'টি টার্মিনালে এখন প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার যাত্রী সেবা পাচ্ছেন। সেই হিসাবে বিমানবন্দরটি বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়। বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
বিশ্বমানের এই টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিং তৈরি করা হচ্ছে। এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে। এ ছাড়া তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট থাকবে। একটি করিডরের মাধ্যমে পুরোনো দু'টি টার্মিনালের সঙ্গে নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করা হবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানিয়েছে, বিমানবন্দরে অ্যাপ্রনে ৩৭টি এয়ারক্রাফট পার্ক করা যাবে। আমদানি ও রপ্তানি কার্গো টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছর মার্চ-এপ্রিলে তা চালু হবার সম্ভবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন।
সম্পাদনা/ রাহুল রাজ
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।