ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সিআইপি বাদ যাবে না
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৫ টি স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৬:৩২
দেশের বৃহত্তর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীদের লাগেজ ও মালামাল পরীক্ষাসহ সকল ধরনের ভোগান্তি লাঘবের নিমিত্তে নতুন দু'টি স্ক্যানার মেশিন বসানো সহ মোট পাঁচটি স্ক্যানার মেশিন সচল রাখা হয়েছে। এরফলে প্রবাসী যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হলো। একইৈ সাথে বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুসংহত হয়েছে বলে দাবি করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ
।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও প্রবাসীরা শ্রমিকরা
নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানান, বিমানবন্দরে ৬ নম্বর গেট দিয়ে ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সিআইপি যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানিং করা হয়। এই ৬টি গেট দিয়েই লাগেজ স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩৪টি বিদেশি এয়ারলাইনস বিভিন্ন দেশের ৫২টি বিভিন্ন রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন ফ্লাইট ওঠানামা করছে। অ্যারাইভার বা ‘আগমনী’ বেল্টে (বিমানে করে এসে শাহজালালে নামার পরের প্রবেশ পথ) তিনটি স্ক্যানার ছিল। একসঙ্গে অনেক যাত্রী এলে ভোগান্তি হতো। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় যাত্রীরা দ্রুত ব্যাগ পেলেও আটকে থাকতে হতো কাস্টম চেকিং এলাকায়। চেকিংয়ের পেছনে যাত্রীদের ৩০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত চলে যেত। পাশাপাশি অনেক লাগেজ স্ক্যান ছাড়াই বের হয়ে যেত। যথাযথভাবে তল্লাশি না হওয়ায় শুল্কায়ন ও ট্যাক্সযোগ্য অনেক পণ্য, এমনকি স্বর্ণের অবৈধ চালানও দেশে প্রবেশের সুযোগ ছিল। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব যেমন হারিয়েছে, তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও ছিল।
তবে ‘বহির্গমন’ বা ডিপার্চার বেল্টে যাত্রীদের স্ক্যানিংয়ের কোনও সংকট ছিল না। শতভাগ স্ক্যান করেই পার হতে হয় সেখানে।
বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে বলছে, কিছু দিন আগে বিমানবন্দরে আরও দু'টি স্ক্যানার লাগানো হয়েছে। এগুলো শতভাগ কাজ শুরু করেছে। ফলে এখন সব যাত্রীর লাগেজ শতভাগ চেক হয়েই বের হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, থার্ড টার্মিনালে বেল্টের সঙ্গেই স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। পৃথকভাবে লাগেজ আর স্ক্যানারে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না সেখানে। একইভাবে টার্মিনাল ১ ও ২ বেল্টে স্ক্যানার লাগালে যাত্রীদের আরও সুবিধা হতো।
বিমানবন্দর কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার আল-আমিন সাংবাদিকদের জানান, আমাদের উদ্দেশ্য শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা। তারা কোনোভাবেই যেন নাজেহাল না হন, ভোগান্তির শিকার না হন, তার জন্য কাজ করা। এ লক্ষ্যে আমরা আরও দু'টি স্ক্যানার স্থাপন করেছি।
তিনি আরো বলেন, প্রথম গ্রিন চ্যানেলে একটি, দ্বিতীয় চ্যানেলে আরেকটি বসানো হয়েছে। এর ফলে প্রথম গ্রিন চ্যানেলের সঙ্গে আরেকটি যুক্ত হওয়ায় সেখানে তিনটি স্ক্যানার আছে এখন। অপরটি দ্বিতীয় চ্যানেলের সঙ্গে মিলে সেখানে মোট দু'টি। সব মিলিয়ে পাঁচটি স্ক্যানার সচল রয়েছে। আগে যেমন স্ক্যানার স্বল্পতায় অনেক লাগেজ চেক ছাড়া বের হওয়ার সুযোগ পেতো, এখন সেটি আর নেই।
বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, আগমনী বেল্ট ১ থেকে ৪ নম্বরের জন্য ৩টি এবং ৫ থেকে ৮ নম্বরের বেল্টের জন্য দু'টি স্ক্যানার কাজ করছে
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আল-আমিন বলেন, স্ক্যানিং কাজে আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিমানবন্দরের বহির্গমন বেল্টের শুরুতেই যাত্রীদের জন্য ৬টি গেট রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি খোলা থাকে। ২ ও ৫ নম্বর দুটি গেট বন্ধ থাকে। ৩, ৪ ও ৬ সবসময় খোলা থাকে। ৬ নম্বর গেট দিয়ে ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সিআইপি যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানিং করা হয়। এই ৬টি গেট দিয়েই লাগেজ স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, বহির্গমন বেল্টের পরের ধাপে বোর্ডিং পাস করানোর জন্য ৫টি চেক-ইন রো আছে। এ নম্বরের রোতে এমিরেটস; বি নম্বর রোতে কাতার, সৌদিসহ অন্যান্য, সি নম্বরে ইউনাইটেড এয়ার, ডি নম্বরে বাংলাদেশ বিমান এবং ই নম্বরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের রো রয়েছে। এসব রোতেও রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের জন্য রয়েছে দু'টি স্থান। এছাড়া ট্রানজিট ও ক্রুদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে আরেকটি, হজ মৌসুমে এটিও ইমিগ্রেশন কাজে ব্যবহার করা করা হয়।
সূত্র বলছে, উড়োজাহাজে ওঠার জন্য বোর্ডিং ব্রিজ রয়েছে ৮টি। এগুলো ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, বর্ধিত ১ এবং বর্ধিত ১৬। যাত্রীরা এর মাধ্যমে উড়োজাহাজে ওঠেন।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সমন্বিত চেষ্টা হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দর নিয়ে যাত্রীদের যেন কোনও অভিযোগ না থাকে। সেই চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি।
আজ শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক কর্মকর্তা নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে বলেন, আমরা শুরু থেকে নিরাপত্তার ঘাটতি নিয়ে সবসময় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতাম। তারপরও নিরাপত্তার বিভিন্ন ঘাটতি রয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।