শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে চায় সরকার

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০:৪৯

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে সরকার চলতি মাসের ‘মাঝামাঝি সময়ে’ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘ছয়টা সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তারা তিনটা টাইম ফ্রেমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন। আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মৌলিক সংস্কারগুলো করার সাথে সাথেই আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় চলে যেতে চাই। অযথা সময়ক্ষেপণ করে ক্ষমতায় থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা এই সরকারের নেই। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে সংস্কার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করব।’

ড. আসিফ নজরুল বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনলাইন আপলোড করা হয়েছে। কমিশনগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের কথা বলেছেন। যা আগামী নির্বাচনের আগে করা যেতে পারে। আশু করণীয় কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যের প্রয়োজন হবে।

আশু করণীয় কাজগুলো করতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। আবার কিছু সংস্কার এক মাসেই হয়ে যাবে।

সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝির মধ্যে থেকে আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী। যদি তারা রাজি থাকেন, রোজার মধ্যেও আলোচনা চলবে। আর রাজনৈতিক দলগুলো যে দ্রুত নির্বাচন চান, আমি মনে করি সেটা বলার অধিকার তাদের আছে এবং দ্রুত বলতে কী, সেটা (তারা) স্পেসিফাই করে বলেননি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, আমাদের এই সরকারের অযথা সময়ক্ষেপণ করে সরকারে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। আমরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র মেরামতের মৌলিক শর্ত পূরণ করার জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কারগুলো অতিজরুরি, সেগুলো করার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা চলে যেতে চাই। এটা নিয়ে কোনোরকম দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই।

নির্বাচন কবে নাগাদ হতে পারে সে ব্যাপারে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের সময়রেখা নিয়ে বারবার আমাদের প্রধান উপদেষ্টা এবং তার পক্ষে প্রেস সেক্রেটারিও ক্লেরিফাই করেছেন। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। আবার বর্ষার কথা বিবেচনা করে ২০২৬ সালে সেটা এগিয়ে এপ্রিল বা মার্চে হতে পারে।

দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা আশু করণীয় হিসেবে অনেক সুপারিশ দিয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ করার কথা বলেছেন। দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না এমন সকল ইনডেমনিটি আইন চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বলেছেন।

এ সময় দুর্নীতি নিয়ে নিজের অধীনে থাকা দুইটি মন্ত্রণালয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সেখানে যারা মন্ত্রী ছিলেন, তারা তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত হাজার কোটি টাকা কিছু বেসরকারি ব্যাংকে জমা রেখেছেন, যে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠার সঙ্গে উনারা নিজেরা বা তাদের আত্মীয়-স্বজনরা জড়িত। যেগুলো উদ্ধার করতে আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছে।’

বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top