ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি
কেন যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন উমামা ফাতেমা, কী বললেন তিনি
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৪:১৯

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দেওয়া নারী আন্দোলনকারীদের ‘ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডে’ মনোনীত করা হয়েছে। মনোনীত করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। আগামী ১ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সংহতি ও সম্মান জানিয়ে এ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন উমামা ফাতেমা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ও অন্যতম সংগঠক তিনি।
শনিবার (২৯ মার্চ) ফেসবুক পোস্টে উমামা ফাতেমা লেখেন, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের ‘ইন্টারন্যাশনাল ওমেন অব কারেজ (আইডব্লিউওসি) অ্যাওয়ার্ডস, ২০২৫’-এর পক্ষ থেকে মনোনীত করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নারী আন্দোলনকারীদের বিশেষ পুরস্কারের জন্য এ মনোনয়ন। এ অ্যাওয়ার্ডের অধীনে ‘ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে জুলাই অভ্যুত্থানের সকল নারীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে পুরস্কার বিষয়ে কী বলা হয়েছে, তা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, নারী আন্দোলনকারীদের কালেক্টিভ স্বীকৃতি আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের নারকীয় হামলাকে প্রত্যক্ষভাবে এন্ডোর্স করে যাওয়ার জন্য অ্যাওয়ার্ডটি ব্যবহৃত হয়েছে।
‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা যুদ্ধকে অস্বীকার করে পুরস্কারটি ইসরায়েলের হামলাকে যে প্রক্রিয়ায় জাস্টিফাই করেছে, তা এ পুরস্কারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যেখানে ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের মৌলিক মানবাধিকার (ভূমির অধিকার) থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। তাই ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সম্মান রেখে এই পুরস্কার আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাখ্যান করলাম।’
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য কী বলছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সহিংস দমনপীড়নের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে একদল সাহসী নারী নেতৃত্ব দিয়েছেন। হুমকি ও সহিংসতা সত্ত্বেও তারা নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুরুষ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে অসাধারণ সাহসিকতা দেখিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, যখন পুরুষ সহকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন নারীরা ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার সময়ও সেন্সরশিপ প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করে যোগাযোগ চালিয়ে যান এবং বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উদ্ভাবনী উপায় খুঁজে বের করেন। চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে এ নারীদের সাহসিকতা ছিল ‘সাহসের সংজ্ঞা’।
ঘোষণায় জানানো হয়েছে, আগামী ১ এপ্রিল পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজনে বিজয়ীদের এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
২০০৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ৯০টিরও বেশি দেশের ২০০ জনেরও বেশি নারীকে পুরস্কার দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিদেশে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনগুলো তাদের নিজ নিজ আয়োজক দেশ থেকে একজন সাহসী নারীকে মনোনীত করে। পরে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নির্বাচন করা হয়। দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তা চূড়ান্ত অনুমোদন করেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।