অবশেষে খিচুড়ি রান্না প্রশিক্ষণ বাতিল
ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাপক সমালোচনার মুখে অবশেষে খিচুড়ি রান্না শিখতে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের বিষয়টি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশন।
প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সভা করেছে। সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ পিইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন। এসময় খিচুড়ি বিষয়ক প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়। তবে বিদেশ সফর বাতিলের কারণ হিসেবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রাইমারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় একটি প্রকল্পে বিদেশে গিয়ে ডিম-খিচুড়ি, সবজিসহ অন্যান্য খাবার রান্না ও প্রসেসিং শিখতে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ভারত সফরে পাঠানোর প্রস্তাব করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
এছাড়া দেশে একই বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আরও ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশের পর সারাদেশে সমালোচনার পরই কমিশন এমন নির্দেশনা দেয়।
তবে বিদেশে প্রশিক্ষণের বিষয়টি বাতিল হলেও দেশে প্রশিক্ষণের জন্য হয়তো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ৩৩ লাখের মতো শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে। দারিদ্রতাসহ নানা কারণে এসব শিশু স্কুলে যাচ্ছে না। খাবার বিতরণের ফলে শিশুরা স্কুলে যাবে এবং তাদের পুষ্টিগত সমস্যা নিরসন হবে বলে দাবি ডিপিইর। ১৯ হাজার ২৮২ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ের এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে তিনদিন শিক্ষার্থীদের দুপুরে খিচুড়ি-ডিম ও সবজি দেওয়া হবে। বাকি তিন দিন দেওয়া হবে পুষ্টিকর বিস্কুট।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) শিশুদের খাবার বিতরণ খরচ ১ হাজার ৭১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ফরটিফাইড বিস্কুট এবং পুষ্টিকর রান্না করা খাবার- এই দুই ধরনের খাবারের মডালিটিজ কার্যকর করা হবে। জাতীয় ও মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, প্রোগ্রাম পর্যালোচনা কর্মশালা, ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ এবং ইস্যুভিত্তিক প্রযুক্তিগত সেমিনার, প্রকল্পভুক্ত প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় খাদ্য এবং বিস্কুট সংরক্ষণ, বিতরণ ও মনিটরিংয়ের জন্য বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) নিয়োগ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় কিছু কিছু আইটেম বাবদ ৭ কোটি ৫০ লাখ, আসবাব পত্র বাবদ ২ কোটি টাকা, একটি জিপ ও ছয়টি মাইক্রোবাস কিনতে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ৮০ লাখ টাকা, যানবাহন ও যাতায়াত বাবদ ২০ লাখ টাকা, বিশেষভাবে যানবাহন মেরামত বাবদ দেড় কোটি চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া, খাদ্য কেনা বাবদ ১৭ হাজার ১৮৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, খাদ্য বিতরণ ফি বাবদ ১ হাজার ৭১৮ কোটি ৫৮ লাখ, প্রাইজ কন্টিনজেন্সি খাতে ১৯০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের আওতায় প্লেট কেনা বাবদ ১১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কতটি প্লেট কেনা হবে তার সংখ্যা উল্লেখ করেনি ডিপিই।
পরিকল্পনা কমিশন যেকোন ব্যয়ের প্রস্তাব যৌক্তিক করার নির্দেশ দিয়েছে। ডিপিপিতে কি তথ্যের ভিত্তিতে এ সকল খাতের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে তা বোধগম্য হচ্ছে না পরিকল্পনা কমিশনের। তাই বিষয়টির যৌক্তিকতাসহ বিস্তারিত বিবরণ জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এনএফ৭১/এমকে/২০২০
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।