'মোজাম্বিকে নিরাপত্তাহীনতায় ৫০০০ বাংলাদেশি'

রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:১৭

ছবি: সংগৃহীত

মোজাম্বিকে নিরাপত্তাহীনতায় ৫০০০ বাংলাদেশি — মানবজমিনের প্রধান শিরোনাম এটি। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের লাখ লাখ নাগরিক অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দাঙ্গা থেকে প্রাণে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে। আর ভিনদেশিরাও বেশ বিপাকে।

দেশটিতে বৈধ-অবৈধ মিলে আট থেকে ১০ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। যার মধ্যে অন্তত ৫ হাজার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ওই প্রবাসীদের বেশিরভাগই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। গত ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কয়েকশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গ্রোসারি শপ ও বাসাবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের অনারারি কনস্যুলেটের দপ্তর। সরকারের দায়িত্বশীলরা মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন, নিরাপত্তাহীনতায় থাকা বাংলাদেশিদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশের মিশন না থাকায় অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে।

$3.3b in foreign debts cleared in 5 months- অর্থাৎ ৫ মাসে ৩৩০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ— ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম এটি। চব্বিশের ৫ অগাস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ৩৩০ কোটি ডলার বা প্রায় ৯০ শতাংশ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে বকেয়া পরিশোধের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। আইনি জটিলতার কারণে বাকি ৪০ কোটি ডলার পরিশোধ করা যাচ্ছে না।

এসব ঋণ পরিশোধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা। এর মধ্যেও আশাব্যঞ্জক খবর হলো, উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ পরিশোধ সত্ত্বেও ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে। রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে হুসনে আরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও অর্থপাচার কমানো। বিদেশি ঋণদাতারা বাংলাদেশকে ঋণ দিতে শুরু করায় রিজার্ভ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুগান্তরের আজকের প্রধান শিরোনাম— সংসার খরচ আরও বাড়বে। হঠাৎ করে কর বাড়ানোর উদ্যোগে খরচ বৃদ্ধির এ সংক্রান্ত খবর বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনে এসেছে। এতে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ৬৫ পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।

এ তালিকায় আছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি ইত্যাদি। এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়াবে। মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খরচও বাড়বে। সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাট হারের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

ঋণ দিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে যোগ হবে। যদিও চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে জানিয়েছিল এনবিআর। তার ওপর যুক্ত হলো আরও ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের বোঝা। এ অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানোর বিকল্প ছিল না।

২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি — আজ নয়া দিগন্তের প্রধান খবর এটি। এতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পে অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে। নিয়ম ভেঙেই ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল। আর তা বাস্তবায়নে প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম সংঘটিত হয়। প্রাথমিক অডিট আপত্তিতে এই প্রকল্পের ১৩টি খাতে দুই হাজার ৪৩ কোটি টাকার বেশি রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির কথা বলা হয়েছে।

অডিট আপত্তি প্রতিবেদনে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়া অবাধ প্রতিযোগিতা সঙ্কোচনের মাধ্যমে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯৯ টাকার চুক্তি সম্পাদন করা হয়। এর মধ্যে ঠিকাদারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আর্থিক সুবিধা প্রদান করায় সরকারের ১২৫ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়। স্পেসিফিকেশন-বহির্ভূত যন্ত্রপাতি আমদানিপূর্বক অনিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ করা হয় ৪০৫ কোটি টাকার বেশি।

চুক্তিবহির্ভূতভাবে কোভিড-১৯ বাবদ বিলের মাধ্যমে ঠিকাদারকে বাড়তি পরিশোধ করায় ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকা। ভ্যালু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নামে প্রাপ্যতার অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করায় ৩৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে । এর বাইরে আরও কিছু খাতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

Remittance hit all time high in 2024- অর্থাৎ ইতিহাসের সবোর্চ্চ রেমিট্যান্স চব্বিশে— দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম এটি। এতে বলা হচ্ছে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা গত বছর রেকর্ড ২৬.৯ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। এই উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ নীতিনির্ধারকদের জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে ডিসেম্বরেই এসেছে রেকর্ড ২৬৩ কোটি ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো একক মাসে এটিই সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রবাসী শ্রমিকেরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, তারা বৈধ চ্যানেলে চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাবেন না। বিপরীতে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে অর্থপাচার হলে এই ব্যবস্থার চাহিদা বেড়ে যায় বেশ। তবে, অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তা অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়।

জাতীয় নির্বাচন কবে ধোঁয়াশা থাকছেই — কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম এটি। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হতে পারে সে বিষয়ে সম্ভাব্য ধারণা দিলেও দিনক্ষণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। ফলে পঁচিশেই নির্বাচন না কি আরও দেরি হবে, তা কারো কাছে স্পষ্ট নয়।

নতুন বছরের শুরুতে নির্বাচনের রোডম্যাপ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ২০২৫-এ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছে। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সংশয় মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে। দলগুলোর ধারণা, বৈষম্যবিরোধীরা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চান।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সরকারের দু'জন উপদেষ্টার নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বক্তব্যে দলগুলোর মধ্যে এই সংশয় তৈরি হয়েছে। তাদের বক্তব্য ও গত ৩১ ডিসেম্বর 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র' দেয়ার পরিকল্পনা একসূত্রে গাঁথা বলে মনে করে বিএনপি। দলটির মতে, বর্তমান সরকার তাদের শাসন ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নির্বাচন দিতে চায় না। এছাড়া, ছাত্রদের বক্তব্যের সঙ্গে জামায়াতের বক্তব্যে অনেকাংশে মিল পাওয়া যায় বলে মনে করছেন অনেকে।

১৬ বছরের আন্দোলন ও ত্যাগের অন্তর্ভুক্তি চাইবে বিএনপি — প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের 'ঘোষণাপত্র' তৈরির যে দায়িত্ব অন্তর্র্বতী সরকার নিয়েছে, তাতে কেবল জুলাই-আগস্টের ৩৬ দিনের গণঅভ্যুত্থানের সময় নয়, বিগত ১৬ বছরের আন্দোলনের, ত্যাগের স্বীকৃতি চাইবে বিএনপি।

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেয়া নিয়ে সরকারের উদ্যোগকে সঠিক বলেও মনে করছেন বিএনপির নেতৃত্ব। যদিও সরকারের এ উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় আছে। রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে, ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দেয়া নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে তা থেমেছে। বড় ধরনের বিতর্ক-বিভেদও আপাতত এড়ানো গেছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেছেন, তারা মনে করেন, এ ঘোষণায় বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, গুম-খুন, নির্যাতন-নিপীড়ন, জেল-জুলুমসহ রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা— সব থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে একমত হয়ে তা করতে হবে। ছাত্রদের 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' নিয়েও ভিন্নমত আছে বিএনপির।

বারবার যাচাইয়ে নিয়োগ জটিলতা — আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের পরও অনেক চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ আটকে দেয়া হয়েছে, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও গোয়েন্দা সংস্থার যাচাইয়ে রাজনৈতিক কারণ ওঠে এলে।

পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই নিয়ম বাতিলের সুপারিশের কথা ভাবছে গঠিত সংস্কার কমিশন। কিন্তু অন্তর্র্বতী সরকার সেই আগের পথেই হাঁটছে। তাদের অবস্থান সরকারি চাকরির নিয়োগে দলীয় সরকারের থেকেও কঠোর। বারবার যাচাইয়ে দ্বিতীয় দফায় প্রকাশ করা গেজেটে ৪৩তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত হয়েছেন ২৩০ জন। নিয়োগবঞ্চিতদের দাবি, বেশিরভাগেরই নিয়োগ আটকে দেয়া হয়েছে পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টার কারণে। নিয়োগের দাবিতে তারা আবেদন করছেন।

বিদ্যুৎ জ্বালানির বাহবা প্রকল্প — দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম এটি। এতে বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪২০ কোটি ঘনফুট। গড়ে ২৮০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। এর প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট উচ্চমূল্যের আমদানি করা এলএনজি। বছরে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করেও ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। গ্যাসের সংকট বাড়ছেই।

তবু উন্নয়নের নামে করা হয়েছে গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন। অন্যদিকে সক্ষমতার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার পরও করা হয়েছে নতুন গ্যাসবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এসব প্রকল্প এখন গলার কাঁটা। ঋণের টাকায় নির্মিত গ্যাস পাইপলাইনগুলো মাটির নিচে পড়ে আছে, যার ঘানি টানছে বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। নতুন সাতটি গ্যাসবিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন না করছে না, তবে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ সরকারের বিপুল অর্থ গচ্চা যাবে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top