মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

‘হৃদয় মণ্ডলকে মুক্তি দিন, না হলে আমাকে গ্রেফতার করুন: জাফর ইকবাল

মুন্সীগঞ্জ থেকে | প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২২, ২১:৪০

‘হৃদয় মণ্ডলকে মুক্তি দিন, না হলে আমাকে গ্রেফতার করুন: জাফর ইকবাল

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তির দাবি করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে সসম্মানে মুক্তি না দিলে তাকেও যেন গ্রেফতার করা হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি শুধু একটি কথাই বলতে চাই শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে সসম্মানে মুক্তি দিতে হবে। নইলে আমাকেও যেন গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, হৃদয় মণ্ডলের সঙ্গে যা হয়েছে তা আমার জন্য অত্যন্ত দুঃখের। দুঃখের এই কারণে যে, আমি শিক্ষকতা জীবনে বিজ্ঞানই পড়িয়েছি ছাত্র-ছাত্রীদের। আরও বেশি দুঃখের কারণ এই জন্য যে, দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বইটি সম্পাদনার সঙ্গে আমি জড়িত। আমার সম্পাদনা বা রচিত একটি বই পড়ান এমন একজন শিক্ষককে কারাগারে যেতে হয়েছে, এই দুঃখের কোনো শেষ নেই।

প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্রের শ্রেণিশিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ওই ক্লাসে পাঠানো হয়। তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে ক্লাসে আলোচনা করেন।

এতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় কয়েকজন ছাত্রকে বারবার ধর্মের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করতে শোনা যায়। হৃদয় মণ্ডল ধর্মকে ‘বিশ্বাস’ এবং বিজ্ঞানকে ‘প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। আলোচনার সময় গোপনে তার বক্তব্যের অডিও ধারণ করা হয়। সেই অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। পরে কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করলে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেন।

পরবর্তীতে পুলিশ হৃদয় মণ্ডলকে আটক করে। এরপর ইসলাম ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে একই দিন হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ। ২৩ মার্চ তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে জেল হাজতে পাঠানো হয়। ১৭ দিন ধরে কারাগারে আছেন বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল।

এনএফ৭১/এমএ/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top