মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

কী থাকছে হযরত শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩৭

ছবি: সংগৃহীত

দৃষ্টিনন্দন অপরূপ নির্মাণশৈলীর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ হতে চলেছে। এরইমধ্যে শেষ হয়েছে ৯০ শতাংশ। এরপরই নান্দনিক নির্মাণশেলী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই টার্মিনাল বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে চেনাবে নতুন করে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার পরে তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় টার্মিনালে যাত্রীদের কীভাবে সেবা দেওয়া হবে, তা প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতীকী একটি বোর্ডিং পাস দেন বিমানবন্দরের কর্মীরা। এরপর তিনি ইমিগ্রেশনে যান। ইমিগ্রেশন থেকে তিনি নিরাপত্তার ধাপগুলো পার হন।

সফট ওপেনিং’ এর পর টার্মিনাল ব্যবহার করে বিমান চলাচল শুরু হলেও এর পুরো ব্যবহার সম্ভব হবে আগামী বছরের শেষ দিকে, আনুষঙ্গিক আরও কিছু কাজ শেষ হওয়ার পর। এ টার্মিনালকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেলের একটি রুটের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

২০১৭ সালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তবে নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ। জাপানের মিৎসুবিশি, ফুজিটা ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং যৌথভাবে টার্মিনালটির নির্মাণ কাজ করেছে।

টার্মিনালটির যাত্রী ক্যাপাসিটি হবে ১ কোটি ৬০ লাখ। এখন যে দুটি টার্মিনালে আছে তার সক্ষমতা আছে ৮০ লাখ যাত্রী। ফলে তৃতীয় টার্মিনাল পুরো চালু হলে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে। টার্মিনালটির ফ্লোর আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গ মিটার। এর আগের দুটি টার্মিনালের মোট ফ্লোর স্পেস ছিলো ১ লাখ বর্গমিটার।

নতুন টার্মিনালে মোট বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে ২৬টি, যেখানে আগের দুটি টার্মিনালে মোট ব্রিজ ছিলো ৮টি। একই সাথে নতুন টার্মিনালে মোট ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। আগের দুটিতে রাখা যেতো ২৯টি উড়োজাহাজ। আগে লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট ছিলো দুই টার্মিনাল মিলিয়ে আটটি। আর তৃতীয় টার্মিনালে এ ধরণের বেল্ট আছে ১৬টি।

আগের দুটি টার্মিনালে মোট চেক ইন কাউন্টার ছিলো ৬২টি আর ইমিগ্রেশন কাউন্টার ছিলো ১০৭টি। তৃতীয় টার্মিনালে আরও যুক্ত হয়েছে চেক ইন কাউন্টার ১১৫টি আর ইমিগ্রেশন কাউন্টার ১২৮টি। নতুন টার্মিনালে এয়ারলাইন্স লাউঞ্জ, ডে-রুম, মুভি লাউঞ্জ, শিশুদের জন্য প্লে-জোন এবং ফুড কোর্ট সংযোজন করা হয়েছে। এগুলো যাত্রীদের বিমানবন্দরে অবস্থান ও অপেক্ষার সময়টিকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

দেশের অর্থনীতিতে আরেকটি গেমচেঞ্জার হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। এই মেগাপ্রকল্পের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে এভিয়েশন, পর্যটন, যোগাযোগ, আমদানি-রপ্তানি ও কৃষিতে। চোখ ধাধানো এই টার্মিনালকে কেন্দ্র করে পাল্টে যাবে দেশের বিমান খাতের চেহারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top