অনন্তলোকে আশ্রয় নিলেন পলাশ, মর্মান্তিক মৃত্যু মানতে পারছেন না পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০ মে ২০২৫, ১৭:৩৮

নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যাকারী র্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহা। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (অন্তিম সংস্কার) সম্পন্ন হয় গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়া পাড়কোনা মহাশ্মশানে।
পরিবারের সদস্যরা বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলের এই মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। তারা অভিযোগ করেন, প্ররোচনা দিয়ে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তারা।
পলাশ সাহা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া তারাশী গ্রামের মৃত বিনয় কৃষ্ণ সাহার ছেলে। চট্টগ্রামে তিনি তার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা ও মা আরতি সাহাকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার বড় ভাই নন্দ লাল সাহা। তার ভাষ্য, দুই বছর আগে ফরিদপুরের চৌধুরীপাড়ায় পলাশের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা ঝামেলা করত। আমার মা আরতি সাহা পলাশের সঙ্গে চট্টগ্রামে থাকতেন, কিন্তু এই বিষয়টি সুস্মিতা কখনও মেনে নিতে পারেনি। সে বারবার মাকে গ্রামে পাঠাতে পলাশকে চাপ দিত, কিন্তু পলাশ রাজি হতেন না। কারণ, সে মাকে ও স্ত্রী দুজনকেই ভালোবাসত।
তিনি আরও বলেন, বুধবার (৭ মে) সকালে সামান্য বিষয় নিয়ে সুস্মিতা আমার মা ও ভাইয়ের গায়ে হাত তোলে। এই অপমান কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি পলাশ। আমাদের ধারণা, এই কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে।
মা আরতী রানী সাহা বলেন, আমার সোনার ছেলে প্রাণ দিয়েছে। আমি সন্তান হারিয়েছি। এ শোক সইতে পারছি না। এর বিচার করতে হবে।
চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে র্যাব-৭-এর ব্যাটালিয়ন সদর দফতর থেকে পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যা থেকে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে।
চিরকুটে লেখা ছিল, আমার মৃত্যুর জন্য মা বা বউ কেউ দায়ী নয়, আমি নিজেই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারিনি। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাই নিক, তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে সবকিছু মায়ের জন্য। দিদি যেন সব কিছু কো-অর্ডিনেট করে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।