মক্কা-মদিনায় তারাবি নামাজ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানা গেল
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২০

আসছে মহিমান্বিত মাহে রমজান। নতুন উদ্যমে ইবাদতে মশগুল হবে মুসলমান। রোজা নামাজ আর তারাবিতে মন দিবে মহান বিশ্ব মুসলিম। তারাবির নামাজ রমজানের প্রাণ। রমজান জুড়ে মুসলমান ২০ রাকাত তারাবিতে খতম করে পুরো কুরআন।
তারাবির রাকাতসংখ্যা শরিয়তের বিশুদ্ধ দলিল দ্বারা প্রমাণিত। গ্রহণযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে ২০ রাকাত তারাবি পড়েছেন। সব সাহাবির আমলও একই রকম ছিল। তবে এ নিয়ে বিতর্ক ও বিভক্তি রয়েছে।
এরইমধ্যে ঘোষণা এলো মুসলিম বিশ্বের পবিত্র দুই মসজিদ মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে এবার রমজানে ১০ রাকাত তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ সালামে ১০ রাকাত তারাবির নামাজ শেষে জামাতে তিন রাকাত বিতির নামাজ আদায় করা হবে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার রমজানে ৫ সালামে ১০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা হবে। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে করোনার কারণে তারাবির রাকাত সংখ্যা কমানো হয়েছিল। তবে ২০২৫ সালে এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকলেও এর নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ১০ রাকাত তারাবির পর তিন রাকাত বিতির নামাজও পড়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে ১০ রাকাত তারাবির নামাজ চালু রাখার মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ২০২০ সালে মহামারির সময় নামাজে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে তারাবির রাকাত সংখ্যা কমিয়ে ২০ থেকে ১০ করা হয়। এই নিয়ম পরে স্থায়ী করা হয়। কম সময়ের নামাজের ফলে মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
এছাড়াও মুসল্লিদের ক্লান্তি কমানো ও বেশি সংখ্যক মানুষকে নামাজ আদায়ের সুযোগ দেওয়ার জন্যও ১০ রাকাত পদ্ধতি অব্যাহত রাখা হয়েছে। মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে প্রতিদিন প্রচুর উমরাহ পালনকারী আসেন। ১০ রাকাত তারাবির ফলে উমরাহ ও নামাজ দুইটিই সহজভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ। যদিও করোনা মহামারির অবস্থা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তারপরও মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে এই নিয়ম বজায় রাখা হয়েছে।
তারাবি মাহে রমজানের রাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ আমল। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে ২০ রাকাত পড়া হয়। রমজান মাসের অবারিত খায়ের-বরকত, রহমত-মাগফেরাত লাভের ও ঘোষিত প্রতিদানপ্রাপ্তির জন্য তারাবির প্রভাব অপরিসীম।
এক বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি: ৩৭, আবু দাউদ: ১৩৭১) সূত্র: ইনসাইড দ্য হারামাইন
বিষয়: মক্কা-মদিনা তারাবি নামাজ সিদ্ধান্ত
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।