দান কবুল হওয়ার আবশ্যিক কিছু শর্ত

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৪:২৪

প্রতীকী ছবি

আমরা অনেকেই মসজিদ, মাদ্রাসা, গরীব-দুঃখী, আত্নীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, হাসপাতাল নির্মাণ, রাস্তাঘাত নির্মাণ ইত্যাদি কাজে দান করে থাকি। কিন্তু নানা কারণে আমাদের এ সমস্ত দান আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হয় না। দান কবুল হওয়ার জন্য অনেকগুলো শর্ত রয়েছে। দান খয়রাত কবুল হলে তার প্রতিদান আল্লাহ দুনিয়াতেই দান করবেন। আর যদি প্রতিদান না পান তাহলে মনে করতে হবে আপনার দানের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে।

আরও পড়ুন>>> হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ল

দান তথা আল্লাহর পথে ব্যয়ের মধ্যে মুসলিম সমাজের উন্নতি ও অগ্রগতি নির্ভর করে। কিন্তু সেই দান মহান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য কিছু শর্ত আছে। নিম্নে সেসব শর্ত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো—

দান শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য : যে ব্যয় করবে, তাকেও সদুদ্দেশ্য প্রণোদিত ও সৎ হতে হবে। দান হতে হবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দান-খয়রাত করো।’

সম্পদ হালাল হতে হবে : পবিত্র সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করতে হবে। দান করতে হবে হালাল অর্থ থেকে। হারাম সম্পদ থেকে কোটি টাকা দান করলেও সওয়াবের আশা করা যাবে না। কেননা আল্লাহ তাআলা হালাল ও পবিত্র বস্তু ছাড়া কোনো কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা যা উপার্জন করো এবং যা আমি তোমাদের জন্য জমিতে উৎপন্ন করি, সেখান থেকে পবিত্র বস্তু ব্যয় করো।’

নিয়তের ওপর ভিত্তি করে দানের প্রতিদান দেওয়া হবে। রাসুল (সা.) বলেন, আমলের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।

যথাযোগ্য ব্যক্তিকে দান করতে হবে : যার জন্য ব্যয় করবে, তাকেও দান গ্রহণের যোগ্য হতে হবে। অযোগ্য ব্যক্তির জন্য ব্যয় করলে দান ব্যর্থ হবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘মানুষ কী ব্যয় করবে—এ বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, বলে দাও, যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করবে তা মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকিন এবং মুসাফিরের জন্য। উত্তম কাজের যা কিছু তোমরা করো, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।’

খোঁটা দানের মহিমা ক্ষুণ্ণ করে : খোঁটা দিলে দানের সুফল পাওয়া যায় না। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দিয়ে ওই ব্যক্তির মতো নিজেদের দান বিনষ্ট কোরো না, যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য নিজের অর্থ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে না।’

লোক-দেখানো দান কবুল হয় না : দান শুধু তখন কবুল হবে, যখন দানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বার্থ উদ্ধারের চিন্তা থাকবে না, আত্মপ্রচার ও প্রদর্শনেচ্ছা থাকবে না, খোঁটা দেওয়া এবং কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা থাকবে না এবং বাছাই করে মন্দ ও নিকৃষ্ট ধরনের সম্পদ দেওয়া হবে না। বরং দানের সময় মন-মগজে আল্লাহর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা না থাকলেই ওই দান কবুল হবে আশা করা যায়।

গোপনে দান করা : যথাসম্ভব গোপনে দান করতে হবে। যদিও নিয়ত বিশুদ্ধ হলে কোনো কোনো দান প্রকাশ্যেও করা যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তা ভালো। আর যদি গোপনে দরিদ্রদের দাও, তাহলে তা বেশি ভালো। এমনটি করলে তোমাদের বহু পাপ মুছে দেওয়া হবে। তোমরা যা-ই করো, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।’

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top