অবিশ্বাস্য একটা যাত্রা ছিল
বিদায়বেলায় অঝোরে কাঁদলেন ফেদেরার, কাঁদল গোটা টেনিস বিশ্ব
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০৪
অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আগেই। এবার কোর্ট থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিলেন রজার ফেদেরার। লেভার কাপের ম্যাচে শুক্রবার জুটি বেঁধে কোর্টে নেমেছিলেন টেনিসের দুই মহাতারকা রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদাল। লন্ডনের ও'টু অ্যারিনার মঞ্চ যেন ছিল শুধু ফেদেরারের জন্যই। পেশাদার টেনিসজীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে যখন নাদালের সঙ্গে কোর্টে আসেন ফেদেরার, তখন পুরো পৃথিবীর টেনিসপ্রেমীদের চোখই যেন চলে গিয়েছিল লন্ডনে।
পেশাদার টেনিস ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা অবশ্য জিততে পারেননি ২০টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী ফেদেরার। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর টিম ওয়ার্ল্ডের ফ্রান্সেস টিয়াফো এবং জ্যাক সকের বিরুদ্ধে ৪-৬, ৭-৬ (৭/২), ১১-৯ ব্যবধানে হেরে যান ফেদেরার ও নাদাল জুটি।
ম্যাচ শেষে নাদালকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। প্রিয় বন্ধুর বিদায়ে নাদাল নিজেও কাঁদলেন। পরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ফেদেরার বললেন, তিনি আজ সুখী, কোনো কষ্ট নেই। নেটিজেনদের মতে, বিশ্বের ক্রীড়া ইতিহাসের অন্যতম কষ্টের এবং একই সঙ্গে অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে এই ফ্রেমটা।
ফেদেরার বলেন, যেকোনো ভাবে সময়টা আমরা পার করে দেব। চমৎকার একটা দিন। সবাইকে বলেছি যে আমি খুশি, দুঃখিত নই। এখানে থাকতে পেরে দারুণ লাগছে। রাফার সঙ্গে খেলা এবং এখানে সব গ্রেট, কিংবদন্তিদের পাওয়াটা দুর্দান্ত, সবাইকে ধন্যবাদ।
তিনি আরও বলেন, সবাই এখানে আছে, আমার ছেলে মেয়েরা আছে। আমার স্ত্রী খুব সাপোর্টিভ। সে আমাকে অনেক, অনেক আগেই থামাতে পারত; কিন্তু সে তা করেনি। সে আমাকে খেলা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছে, খেলতে দিয়েছে। ধন্যবাদ তোমাকে। একটা বিষয় কিছুটা মজার যে সবসময় আমরা আমার মাকে সবকিছুর জন্য দোষ দেই, কারণ তাকে ছাড়া অবশ্যই আমি এখানে থাকতাম না। আমার বাবা-মাকে ধন্যবাদ। সবসময় তারা পাশে থেকেছেন। সবাইকে ধন্যবাদ, অনেক মানুষকে ধন্যবাদ দিতে হবে। অবিশ্বাস্য একটা যাত্রা ছিল।
বিদায় বেলায় পুরো কোর্ট চক্কর দিলেন। হাত নেড়ে দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করলেন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন। হাত বাড়িয়ে দিলেন কিংবদন্তি রড লেভার। এরপর সম্মান প্রদর্শনের বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নাদাল ও জোকোভিচ। তাদের এক সময়ের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে কাঁধে চড়ে বিদায় সম্ভাষণ জানালেন।
এরআগে, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে অভিষেক হয় ফেদেরারের। অসংখ্য শিরোপা জেতার পাশাপাশি নিজেকে কিংবদন্তির শীর্ষস্থানে নিয়ে গেছেন। উইম্বলডনে রেকর্ড আট, ইউএস ওপেনে টানা পাঁচ, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ছয় ও ফরাসি ওপেনে এক-মোট ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ঝুলিতে নিয়ে ৪১ বছর বয়সে ইতি টানলেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।