১৩ রেকোর্ড সঙ্গী করে অবসরে তামিম ইকবাল
রাহুল রাজ | প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩:৩০
আমায় ডেকো না। ফেরানো যাবে না। ফেরারী পাখিরা কুলায় ফেরে না। গানের কথা গুলো পুরোপুরি মিলে যায় তামিম ইকবার খানের সঙ্গে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দলে তামিম ইকবালকে চেয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের চাওয়াকে আমলে নিয়ে নির্বাচক কমিটিও চেয়েছিল তামিমকে ফেরাতে। বিসিবির পক্ষ থেকে সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল।
বিপিএল চলাকলে সিলেটে নির্বাচক কমিটির সঙ্গে দুই দফা আলোচনার পর, প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন তামিম।
তবে আন্তর্জাতীক ক্রিকেট না ফেরার সিধান্তেই অটল থাকলেন খান সাহেব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই সিদ্ধান্তই জানিয়ে দিলেন দেশসেরা এই ওপেনার। নিজের ফেসবুকে পোষ্ট করেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।
এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইতে বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের চমকে দিয়ে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। নাটকীয়ভাবে একদিন পরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে তিনি ফের ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও এরপর আর খেলা হয়নি তামিমের। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের দল থেকে তিনি সরিয়ে নেন নিজেকে। এরপর থেকে তার জাতীয় দলে ফেরার সময় নিয়ে অনিশ্চয়তার পেন্ডুলাম দুলছিল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থেকে অবসর নেবার সময় তামিম ইকবাল নিজের সঙ্গে ১৩ টি রেকোর্ড যুক্ত করেছেন।
১। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের তো বটেই, দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিং জুটির বিশ্বরেকর্ড তামিম ইকবালের দখলে। ২০১৫ সালে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে মিলে ৩১২ রান তুলেছিলেন ওপেনিংয়ে। ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও সে রেকর্ড ভাঙেনি এখনও।
২। বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যাটার যার নামের পাশে তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি আছে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে এই কীর্তি গড়েন তামিম।
৩। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করা প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার তিনি। তার রান বাংলাদেশের হয়ে ১৫১৯২, যা বিশ্ব একাদশের হয়ে ৫৭।
৪। তিন ফরম্যাটে তার সেঞ্চুরি ২৫টি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ এটি।
৫। বাংলাদেশের হয়ে ১১৯ বার পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করেছেন তামিম, যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
৬। সব ফরম্যাট মিলিয়ে নিদেনপক্ষে ১০০০ রান করাদের মধ্যে তামিমের গড়ই সর্বোচ্চ (৩৫.৪১)
৭। ওয়ানডেতে ৮০০০ রান করেছেন, এমন বাংলাদেশি একজনই আছেন, তিনি তামিম ইকবাল। ২৪৩ ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন ৮ হাজার ৩৫৭ রান।
৮। ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি করা প্রথম বাংলাদেশি তামিম ইকবাল। তিনি থেমেছেন ১০৩ ছক্কা নিয়ে।
৯। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান তিনি। ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংসটা তিনি খেলেছিলেন ১৯ বছর ২ দিন বয়সে।
১০। ওয়ানডেতে টানা পাঁচ ফিফটি করা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবাল। টেস্ট ক্রিকেটেও তিনি গড়েছেন এই রেকর্ড।
১১। ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই বার ১৫০ ছাড়ানো ইনিংস আছে, এমন ব্যাটার বাংলাদেশে একজনই আছেন, তিনি তামিম ইকবাল।
১২। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি শূন্য রানের রেকর্ড তামিমের। ৩৬ বার রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়েছেন তিনি।
১৩। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার অধীনে ৩৭ ম্যাচের মধ্যে তার দল ২১ ম্যাচে জিতেছে। সাফল্যের হার ৬০%।
শুরু আছে যার শেষও আছে তার। তামিম ইকবারও তার বেত্রিক্রম নয়। তবে তার শেষে মিশে আছে অভিমান, ক্ষোভ আর চাপা কান্না। শেষ হইয়াও হইল না শেষ’। ছোটগল্প নিয়ে লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই চরণের মতোই অবস্থা তামিম ইকবালের জীবনে।
বিষয়: রাহুল রাজ আমায় ডেকো না তামিম ইকবাল অবসর
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।