পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটার সোহেলী আক্তারকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তিনি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির দুর্নীতিবিরোধী কোডের পাঁচটি ধারা ভঙ্গ করেছেন। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন কোডের পাঁচটি বিধি লঙ্ঘনের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে সোহেলীর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি কার্যকর শুরু হয়ে গেছে।
২০২৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের কোনো এক ক্রিকেটারকে মুঠোফোনে ফিক্সিংয়ের বার্তা পাঠান সোহেলী। এ জন্য ওই ক্রিকেটারকে বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়েছিলেন। সেই ক্রিকেটার অবশ্য অসাধু পথে পা না দিয়ে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে (এসিইউ) জানান ব্যাপারটি।
আইসিসির অ্যান্টি-করাপশনের কোডের যেসব বিধিগুলো লঙ্ঘনের কথা স্বীকার করেছেন সোহেলি—২.১.১ ধারায় ম্যাচ ফিক্সিং বা যেকোনো উপায়ে খেলার ফলাফল, অগ্রগতি, আচরণ বা অন্যান্য দিক অনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা বা এর সঙ্গে জড়িত থাকা, যার মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ পারফরম্যান্স করাও অন্তর্ভুক্ত। ২.১.১ ধারা লঙ্ঘনে আছে—ম্যাচ ফিক্সিং বা বাজি সংক্রান্ত উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য ঘুষ বা অন্য কোনো পুরস্কার গ্রহণ, গ্রহণে সম্মতি প্রদান, প্রস্তাব করা বা গ্রহণের চেষ্টা করা।
২.১.৪ ধারায় অন্য কোনো অংশগ্রহণকারীকে ওপরের যেকোনো বিধান লঙ্ঘনের জন্য প্ররোচিত করা, উৎসাহিত করা, নির্দেশনা প্রদান করা বা কোনোভাবে সহায়তা করা। ধারা ২.৪.৪—দুর্নীতি দমন বিভাগকে (এসিইউ) দেরি না করে দুর্নীতির জন্য করা কোনো প্রস্তাব বা আমন্ত্রণের সম্পূর্ণ তথ্য জানাতে ব্যর্থ হওয়া। ধারা ২.৪.৭-এ আছে দুর্নীতি দমন বিভাগকে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করা বা বিলম্ব করা, যার মধ্যে প্রাসঙ্গিক নথিপত্র বা অন্যান্য তথ্য গোপন করা, বিকৃত করা বা ধ্বংস করাও অন্তর্ভুক্ত।
দুই বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে থাকা এক নারী ক্রিকেটারকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন দলের বাইরে থাকা সোহেলী। দুজনের কথোপকথনের অডিও প্রকাশ হলে বেশ হইচই হয় দেশের ক্রিকেটে। সেখানে জানা যায়, জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার বিশ্বকাপ দলের এক সদস্যকে নিয়মবহির্ভূত প্রস্তাব দেন। সেই ক্রিকেটার অবশ্য ওই প্রস্তাবে রাজি হননি।
জাতীয় দলের সঙ্গে থাকা ওই ক্রিকেটার ঘটনাটি দ্রুত টিম ম্যানেজমেন্টকে অবহিত করেন। টিম ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) বিষয়টি জানায়। বিষয়টি দ্রুত আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের (এসিইউ) নজরেও নিয়ে আসা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি দুই বছর তদন্ত করেছে এসিইউ। সেটিরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ পাঁচ বছরের নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আইসিসি।
বাংলাদেশ দলের হয়ে সোহেলী সবশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০২২ সালে। সব মিলিয়ে দুটি টি-টোয়েন্টি ও ১৩টি ওয়ানডে খেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন সব মিলিয়ে ১১টি, ব্যাট হাতে করেছেন ৬ রান।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।