২০২৩ সালের মার্চে ট্রিপ সম্পূর্ণ করে বাড়ি ফিরবে পরিবারটি
অন্ধ হতে চলা সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বাবা-মা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৩৩
হাতে আর সময় নেই। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, আর কদিন পরেই দৃষ্টি শক্তি হারাবে সন্তানরা। আর তাই দৃষ্টিশক্তি হারাতে চলা সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন এক কানাডিয়ান দম্পতি।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক বছর আগে তাদের তিন বছর বয়সী মেয়ে মিয়ার মধ্যে প্রথম দৃষ্টি সমস্যা দেখা দেয়। তার বছরখানেক পর মিয়ার দুরারোগ্য ‘রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’ ধরা পড়ে। ১২ বছর ধরে বিবাহিত এই দম্পতি তাদের ছেলেদের মধ্যেও একইরকম উপসর্গ লক্ষ্য করেন।
রোগটি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রোগের কারণে সময় যত গড়ায় ততই দৃষ্টিশক্তি হারায় রোগীরা। এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই ও আক্রান্তরা মধ্যবয়সে এসে পুরো দৃষ্টিশক্তি হারায়।
সন্তানদের মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধি আছে জানতে পেরে লেমে ও পেলেটিয়ার দম্পতি এই দুর্ভাগ্যকে মেনে নেন এবং সন্তানদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেয়। আর তাই চিকিৎসকের পরামর্শে অন্ধ হতে চলা সন্তানদের স্মৃতি সমৃদ্ধ করতে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন ওই দম্পতি।
এডিথ লেমে বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ ‘রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’ রোগ প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কোন নিরাময় বা কার্যকর চিকিৎসা নেই। তিনি আরও বলেন, আমরা জানি না কত দ্রুত তারা দৃষ্টি হারাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো মধ্যবয়সে তারা পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারাবে।
বড় মেয়ে মিয়ার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, ভালো কিছু দৃশ্য তার স্মৃতিতে রাখতে পারেন। এটা শোনার পর ওই দম্পতি অন্য সন্তানদের জন্যও একই কথা ভাবেন। শুধু দৃশ্য নয়, ওই দম্পতি চাইছেন সন্তানদের স্মৃতিতে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও স্থানের ছবিও রাখতে। এ কারণে ওই দম্পতি সময় থাকতেই সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।
লেমে জানান, মহামারির কারণে ২০২০ সালে এই বিশ্বভ্রমণ শুরু করতে পারেননি তারা। তারপর চলতি বছরের মার্চে তারা কোনোরকম সফরসূচি ছাড়াই কানাডার মন্ট্রিল থেকে যাত্রা শুরু করেন।
ওই পরিবারটি তাদের বিশ্বভ্রমণ নামিবিয়া দিয়ে শুরু করে। যেখানে সন্তানরা হাতি, জিরাফ কিংবা জেব্রার মতো প্রাণীদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিল। সেখান থেকে তারা জাম্বিয়া ও তানজানিয়া ঘুরে তুরস্কে যান। সেখানে তারা এক মাস অবস্থান করেন।
পেলেটিয়ার জানান, তিনি তারা বাচ্চাদের এমন জিনিস দেখাতে চান যা তারা বাড়িতে বসে দেখতে পাবে না। পরিবারটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তার ট্রিপ সম্পূর্ণ করে কানাডার কুইবেকে নিজেদের বাড়ি ফিরে যাবে বলে জানা গেছে।
বিষয়: অন্ধ সন্তান বিশ্বভ্রমণে বাবা-মা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।