শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ৫০০ জনের মৃত্যু, বাস্তুচ্যুত ১৪ লাখ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২২, ০৬:৩৯

নাইজেরিয়ায় বন্যা

নাইজেরিয়ায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে ১৪ লাখের বেশি মানুষ। দেশটির সরকারের বরাতে এমনটা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।

ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল এই দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নাইজেরিয়ার মানবিকবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ১০ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, প্রায় ৫০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আহত হয়েছে ১ হাজার ৫৪৬ জন। সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫ হাজার ২৪৯টি বাড়ি এবং ৭০ হাজার ৫৬৬ কৃষিজমি।

মানবিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নাসির সানি-গওয়ারজো বলেছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ আনতে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মানজো ইজেকিয়েল বুধবার এএফপিকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির সবশেষ পরিসংখ্যান গত সপ্তাহের শেষের। বর্ষাকাল সাধারণত জুনের দিকে শুরু হলেও বেশির ভাগ মৃত্যু এবং বাস্তুচ্যুতের ঘটনা আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে।

দেশটির দক্ষিণ অ্যানামব্রা রাজ্যের নাইজার নদীতে বন্যার কারণে গত শুক্রবার একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ৭৬ জন মারা যায়।

নাইজেরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারাবা, ইবোনি, বেনু ও ক্রস রিভার স্টেটের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ছিল। এমনকি আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানায় আবহাওয়া সংস্থা।

প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাঁধ ছেড়ে দেওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ইজেকিয়েল আরও জানান, মানুষ আঞ্চলিক পরিকল্পনা নিয়ম লঙ্ঘন করে জলপথের কাছাকাছি ঘরবাড়ি নির্মাণের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।

এরআগে, ২০১২ সালে নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ৩৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গৃহহীন হয়েছিল ২১ লাখেরও বেশি মানুষ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গত মাসে সতর্ক করে বলে, খাদ্য বিপর্যয়ের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ছয়টি দেশের মধ্যে নাইজেরিয়াও রয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গত মাসে সতর্ক করে বলেছে, ক্ষুধা বিপর্যয়ের উচ্চঝুঁকিতে থাকা ছয়টি দেশের মধ্যে নাইজেরিয়াও রয়েছে।

এদিকে, প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ভেসে যাওয়ায় পরে এই সপ্তাহে রাজধানী আবুজার পেট্রোল স্টেশনগুলিতে জ্বালানীর ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।

অন্যদিকে, চাল উৎপাদনকারীরা সতর্ক করেছেন যে বিধ্বংসী বন্যা দেশটিতে চালের দামকে প্রভাবিত করতে পারে যেখানে স্থানীয় উৎপাদনকে উদ্দীপিত করার জন্য চাল আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গত মাসে বলেছে যে নাইজেরিয়া ছয়টি দেশের মধ্যে ক্ষুধার বিপর্যয়ের উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top