রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিবিসির ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তা সরকারের পুরোনো রীতিরই ধারাবাহিকতা

টানা দুইদিন ধরে বিবিসির দিল্লি-মুম্বাই কার্যালয়ে তল্লাশি

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৭:৪৪

বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বাই অফিস

বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বাই অফিসে আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতের আয়কর কর্মকর্তারা। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আয়কর দপ্তরের দল বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে পৌঁছায়। বিবিসির কর্মীরা জানান, কার্যালয়ে পৌঁছে সংবাদকর্মীদের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জমা নেন আয়কর কর্মকর্তারা।

এদিকে, তল্লাশি অভিযান নিয়ে দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। এ ঘটনাকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়েছে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি দেশটির সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পরই দেশটিতে বিবিসির দুই কার্যালয়ে অভিযান চালানোর ঘটনাটি ঘটলো। বিবিসির ওই তথ্যচিত্রে ২০২২ সালে গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মোদির ভূমিকা তুলে ধরা হয়, যা দেশটিতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

বিবিসির এই তথ্যচিত্রকে বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে সরকার তার সম্প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সামাজিকমাধ্যম থেকেও সরকারের চাপে তুলে নেয়া হয় তথ্যচিত্রটি।

বিবিসির প্রামাণ্যচিত্রে প্রধানত দেখানো হয়েছে, কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন। এমন অনেক কথাই প্রামাণ্যচিত্রেতে বলা হয়েছে, যা নতুন নয়।

কর কর্মকর্তারা বলছেন, তল্লাশি নয়, ‘আয়কর জরিপের’ অংশ হিসেবে তারা বিবিসির কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। বিবিসি বলেছে, তারা আয়কর দপ্তরকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।

ভারতে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলছে, সম্প্রতি একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেসব সংবাদমাধ্যম সরকারি নীতি বা ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা করছে, তাদেরই সরকারি এজেন্সি দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে। এই প্রবণতা সাংবিধানিক গণতন্ত্রের পরিপন্থী।

এডিটর্স গিল্ডও আরও বলেছে, বিবিসির ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তা সরকারের পুরোনো রীতিরই ধারাবাহিকতা। বারবার সরকার এভাবে ভয় দেখিয়ে সংবাদপত্র ও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করে চলেছে।

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top