কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলো রাশিয়া

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০২৩, ০২:৫২

ছবি: সংগৃহীত

কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। সোমবার (১৭ জুলাই) ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, চুক্তিটি স্থগিত করা হয়েছে। দিমিত্রি পেসকভ বলেন, দুর্ভাগ্যবশত কৃষ্ণ সাগর চুক্তির রাশিয়া সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে এই চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। যখন চুক্তি অনুসারে সেই বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হবে, তখন আমরা চুক্তিতে ফিরে আসব।

গত বছরের জুলাইয়ে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেন 'কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি' সই করে। চুক্তি হওয়ার আগে ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে রেখেছিল রুশ সেনাবাহিনী। ফলে চুক্তি থেকে রাশিয়া বের হয়ে গেলে শস্য রপ্তানি সম্ভব হবে কি না তা স্পষ্ট নয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, মস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি ইউক্রেন, তুরস্ক ও জাতিসংঘকে জানিয়ে দিয়েছে।

এর আগে, কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে নিরাপদে শস্য পরিবহণের জন্য জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর অধীনে গত বছরের শেষদিক থেকে বিশ্ব বাজারে খাদ্য রপ্তানির সুযোগ পায় ইউক্রেন। চুক্তি স্বাক্ষরের এক বছরের মাথায় চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মস্কো। ঐতিহাসিক এ চুক্তিটি ১২০ দিনের জন্য স্বাক্ষরিত হয়েছিল।  এরপর দফায় দফায় এটি নবায়ন করা হয় কিন্তু এবার আর নতুন করে চুক্তিতে থাকতে চাইছে না রাশিয়া।

চুক্তি নবায়নের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চিঠিও লিখেছিলেন কিন্তু রাশিয়ার অভিযোগ, শিপিং ও বীমার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেশটির খাদ্য ও সার রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির আওতায় ইউক্রেন ৩২ মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য রপ্তানি করছে। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন শুধু ধনী দেশগুলোকেই খাদ্য দিচ্ছে। দরিদ্র দেশগুলো এখনো খাদ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। অথচ চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ইউক্রেন এমন দেশগুলোকে শস্য রপ্তানিতে প্রাধান্য দেবে যারা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে কিন্তু এর বদলে তারা তাদের ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোকে খাদ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে।

শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইউক্রেন রপ্তানি চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার তিনি বলেছেন, তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শস্য সরবরাহের একটি যুগান্তকারী চুক্তি থেকে রাশিয়া বের হয়ে যাওয়ার পরও ইউক্রেন শস্য রপ্তানি অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত রয়েছে। 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top