বিপর্যয়ের জন্য ইহুদিবাদী সরকারের কর্মকাণ্ডই দায়ী

ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনাকারীদের হাতে চুম্বন করি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:২৩

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি বলেছেন, যারা ইহুদিবাদী শাসকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছে আমরা তাদের হাতে চুম্বন করি। এসময় তিনি শনিবার হামাসের ভয়াবহ হামলার পেছনে ইরানের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ইসরায়েলে হামাসের হামলা শুরুর পর প্রথমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। খবর আলজাজিরার।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত আজ চতুর্থ দিনে গড়াল। গত শনিবার বিমান ও স্থলপথে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায় ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে লড়াই চলছেই। হামাসের অতর্কিত হামলায় হতচকিত ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে। লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ১৬০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে এখনও লাগাতার রকেট ছুঁড়ছে হামাস। অন্যদিকে ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপ লক্ষ্য করে শেলিং করছে। সময় সময় বিমানহামলাও চালানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ইসরায়েলের অন্য সীমান্তে রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ।

অন্যদিকে পণবন্দিদের হত্যার হুমকি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের হাতে অন্তত ১০০ পণবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এই ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে ইসরায়েলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা সহজে মেরামত করা যাবে না। তিনি আরও বলে, এই বিপর্যয়ের জন্য ইহুদিবাদী সরকারের নিজস্ব কর্মকাণ্ডই দায়ী।

এর আগে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যদিও এই যুদ্ধ ইসরায়েল শুরু করেনি, তবে এটি শেষ করবে। সোমবার (৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন নেতানিয়াহু।

হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অংশ হিসেবে ইসরায়েল তিন লাখ সৈন্য মাঠে নামিয়েছে। ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধের পর ইসরায়েলের এটিই সবচেয়ে বড় সেনা সমাবেশ। তখন চার লাখ রিজার্ভ সৈন্য মোতায়েন করেছিল ইসরায়েল। টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল একটি যুদ্ধে আছে। আমরা এই যুদ্ধ চাইনি। সবচেয়ে নৃশংস ও বর্বর উপায়ে আমাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু, যদিও ইসরায়েল এই যুদ্ধ শুরু করেনি, তবে ইসরায়েল এটি শেষ করবে।

শনিবার ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের অনুপ্রবেশের মাত্রা এবং হামলার পরিশীলিততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, তারা একাই এটি করেছে কিনা কিংবা কারও সহায়তা পেয়েছে কিনা। ইরান হামাসকে অর্থায়ন করে এবং যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্ররা।

গেলো মাসে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় এক বক্তৃতায় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ওয়াশিংটনের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসি। তিনি বলেন, অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মুনাফা করার সুযোগ করে দিতেই ইউক্রেনে অশান্তি জিইয়ে রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে রইসি আমেরিকাকে নিশানা করে বলেন, আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া মনে করে, তাদের দেশ সুসজ্জিত উদ্যানের মতো। আর বাকি বিশ্ব জঙ্গলের রাজত্ব। তারা গোটা বিশ্বকে তাদের পছন্দ অনুসারে গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা কখনওই সফল হবে না। আমেরিকা এবং পশ্চিমী দেশগুলির দিন ঘনিয়ে এসেছে। রইসির বক্তৃতার সময় জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি গিলার্ড এর্ডান প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top