সোমালিয়ার জলদস্যুদের নিয়ে সিনেমা!
রাশেদ রাসেল | প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৫
সোমালিয়ার জলদস্যুদের নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে অনেক।
ইতালির উপনিবেশ থেকে বেরিয়ে সোমালিয়ার জন্ম ১৯৬০ সালে। কিন্তু আজ দেশটির নাম শুনলেই সবার চোখে ভাসে জলদস্যুদের কথা। বিদেশি মাছ ধরা নৌযানের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে স্থানীয় জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দস্যুবৃত্তির দিকে ঝুঁকে। ২০০৫ সালের পর থেকে সোমালিয়ান জলদস্যুরা আক্রমণ শুরু করে। ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমালিয়ার জলদস্যুদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বেশকিছু সিনেমা। বেশির ভাগ সিনেমা সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। চলুন জেনে আসা যাক সিনেমা গুলো সম্পর্কে।
দ্য পাইরেটস অব সোমালিয়া
এ সিনেমাটি ২০১৭ সালে নির্মিত। ব্রায়ান বাকলি ও জয় বাহাদুরের রচনায় ছবিটি নির্মাণ করেন ব্রায়ান বাকলি। এটি একটি বায়োগ্রাফি ও ড্রামানির্ভর সিনেমা যেটিতে অভিনয় করেন জনপ্রিয় অভিনেতা আল পাচিনো, ইভান পিটারস, মেলেনি গ্রিফিত, বারখাদ আবদি, কোরাল পেনা, ফিলিপ ইট্রিনগার, রবার্ট হোপস প্রমুখ। ২০০৮ সালে র্দুর্র্ধষ সাংবাদিক জয় বাহাদুর সোমালিয়ার জলদস্যুদের মধ্যে নিজেকে যুক্ত করার জন্য একটি অর্ধ-বেক পরিকল্পনা তৈরি করে। তিনি শেষ পর্যন্ত এই ব্যক্তিরা কারা, তারা কীভাবে বসবাস করেন এবং যে শক্তিগুলো তাদের চালিত করে সে সম্পর্কে প্রথম ক্লোজআপ লুক প্রদান করতে সফল হন। বারখাদ আবদি, যিনি সোমালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন, ক্যাপ্টেন ফিলিপসে তার ব্রেক আউট ভূমিকা ছিল। সোমালিয়ান জলদস্যুদের নিয়ে একটি সিনেমা। বারখাদ আবদি সেই মুভিতে প্রধান জলদস্যুদের একজনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যেটি একটি ঘটনার বর্ণনা করছে, এটি এ গল্পের অংশ।
আ হাইজ্যাকিং
ডেনমার্কের একটি কার্গো জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ড্যানিশ সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। এতে কার্গো জাহাজের মালিক ও জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনাকে নাটকীয়ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ড্যানিশ নির্মাতা টোবায়াস লিন্ডহোম পরিচালিত সিনেমাটির ৬৯তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়েছে।
স্টোলেন সিস
২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর ড্যানিশ জাহাজ এমভি সিইসি ফিউচার ছিনতাইয়ে ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছিল। এ সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি ২০১২ সালে মুক্তি পেয়েছে। জিম্মি অবস্থায় জাহাজের ভিতরে থাকা নাবিকদের দুর্দশাকে ক্যামেরায় তুলে আনা হয়েছে। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা থিমায়া পেইন।
ফিশিং উইদাউট নেটস
এ সিনেমার গল্পটা একটু আলাদা। জলদস্যুদের জীবনকে পর্দায় তুলে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা কাটলার হডিয়র্ন। সোমালিয়ার জেলেদের কীভাবে জলদস্যুতায় বাধ্য করা হয়, সেই গল্প তুলে আনা হয়েছে। ছবিটি ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাটি ২০১২ সালে সানডেন্স চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গ্র্যান্ড জুরি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে।
লুটেরে
খ্যাতিমান নির্মাতা হংসল মেহতা। ‘স্ক্যাম ১৯৯২’ নির্মাণ করে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। আবারও নতুন কাজ নিয়ে আসছেন তিনি, যেখানে জড়িয়ে আছে তার নাম! নাম ‘লুটেরে’। যদিও এটি নির্মাণ করেছেন তার পুত্র জয় মেহতা। মার্চের ৬ তারিখে প্রথম ট্রেলার প্রকাশিত হয় ডিজনিপ্লাস হটস্টারের ইউটিউব চ্যানেলে। ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের সেই ট্রেলারাটিতে মূলত ফুটে উঠেছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের তাণ্ডব! সাগরপথে জাহাজে সোমালিয়ান জলদস্যুদের আক্রমণই এ সিরিজটির উপজীব্য। ভারত থেকে মালবোঝাই একটি জাহাজ রওনা দেয় ইউক্রেনের উদ্দেশে। সেই যাত্রাপথেই সোমালিয়ান জলদস্যুর হাতে জাহাজটি অপহরণ হয়। এর পরই শুরু মূল গল্প। মূলত অপহরণের পর এ জাহাজের কর্মীদের স্ট্রাগল ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্ধকার দিক উঠে এসেছে ট্রেলারে। প্রধান চরিত্রে দেখা গেছে রজত কাপুর, বিবেক গোম্বার, দীপক তিজোরি, অভিনাশ পান্ডে, গৌরব শর্মাদের। জানা যায়, ডিজনি হটস্টারের নতুন এ সিরিজটির শুটিং হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রিটেন ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। শুক্রবার থেকে ডিজনিপ্লাস হটস্টারে এটি স্ট্রিমিং হওয়ার কথা।
ক্যাপ্টেন ফিলিপস
২০০৯ সালের ৭ এপ্রিল ড্যানিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কার্গো জাহাজ মারস্ক অ্যালবাবা ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটির ক্যাপ্টেন ছিলেন রিচার্ড ফিলিপস। জিম্মি অবস্থায় দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন ফিলিপস; সেই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ২০১৩ সালের অক্টোবরে। সিনেমায় ফিলিপস চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলিউড তারকা টম হ্যাঙ্কস। পল গ্রিনগ্রাস পরিচালিত সিনেমাটির চিত্রনাট্য লিখেছেন রিচার্ড ফিলিপস ও বিলি রে। জিম্মিদশা থেকে ফিরে আ ক্যাপ্টেনস ডিউটি মে একটি বই লেখেন ফিলিপস। সেই বই থেকেই সিনেমার চিত্রনাট্য করা হয়েছে।
দ্য প্রজেক্ট
প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক অ্যাডাম চারলস্কি। সোমালিয়ার জলদস্যুতা শিপিং বিশ্বকে কতটা হুমকিতে ফেলছে; এটিকে মোকাবিলা করতে কী করা যায়-এসব নিয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০১৩ সালে ২১ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত এ প্রামাণ্যচিত্র বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।