পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ জারিফ

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ জারিফ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। দেশটির বিচার বিভাগের প্রধানের ‘উপদেশ’ মেনেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সোমবার (৩ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের পদত্যাগপত্র পোস্ট করেছেন তিনি। গত ছয় মাস নিজের ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ‘সবচেয়ে তিক্ত’ সময় উল্লেখ করে পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, গত ছয় মাস ধরে তিনি ও তাঁর পরিবারকে জঘন্য অপমান ও অপবাদ সহ্য করতে হয়েছে। খবর-আনাদোলু

জাভেদ জারিফ জানান, বিচার বিভাগীয় প্রধান গোলাম হোসেন মোহসেনি এজেই তাঁকে পদত্যাগ করতে ‘উপদেশ’ দিয়েছেন। দেশের চলমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে ‘সরকারের ওপর আরও চার তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে’ তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যাওয়ার উপদেশ দেন বিভাগীয় প্রধান গোলাম হোসেন।

পদত্যাগপত্রে জারিফ আরও লেখেন, জাতীয় স্বার্থ এগিয়ে নিতে ছোটখাটো ভূমিকা রাখায় গত চার দশকে আমি অসংখ্য অপমান ও অভিযোগ সহ্য করেছি। বিরামহীন মিথ্যা ও বক্তব্য বিকৃতির মুখেও দেশের স্বার্থে আমি এত দিন চুপ ছিলাম। আশা করছি, আমার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সরকারের সফলতার পথে বাধা দূর হবে।

এদিকে জারিফের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তর তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারের ওপর চাপ কমাতে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে।

জাভেদ জারিফ সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি মাসুদ পেজেশকিয়ানের পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। পরে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তাঁকে সরকারের কৌশলগত পরামর্শদাতা হিসেবে বেছে নেন।

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমলে আট বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন জাভেদ জারিফ। তিনি ২০১৫ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে করা ইরানের পরমাণু চুক্তিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন।

তবে নিজের রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ ৪০ বছরের মধ্যে গত ছায় মাস ‘সবচেয়ে তিক্ত’ ছিল বলে পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন জাভেদ জারিফ।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে সমালোচকেরা তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতে শুরু করে। সমালোচকদের মতে, জাভেদকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে। কারণ, তাঁর সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে। তাঁরা জন্মসূত্রে ওই দেশের নাগরিক।