ভারতের মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা, রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৫১
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ‘বাবরি মসজিদ’ নামের একটি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ক। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় এই ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের ওই বিধায়কের নাম হুমায়ুন কবির। তার এমন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজ্যটিতে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, ভোটের রাজনীতি ঘিরে ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।
বিজেপির মুখপাত্র ইয়াসের জিলানি বলেন, ‘তৃণমূল নেতারা, বিশেষ করে বিধায়ক হুমায়ুন কবির ঘৃণার রাজনীতির জন্যই পরিচিত। তিনি কেবল তোষণের রাজনীতি করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করছেন। তিনি জানেন, আগামী নির্বাচনে মানুষ তৃণমূলকে ছুড়ে ফেলবে, সেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তনের ঢেউ উঠছে। এই অস্থিরতার কারণেই হুমায়ুন কবির এবং তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা ভোটব্যাংক বাঁচাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’
এর আগে হুমায়ুন কবির ঘোষণা দেন, আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। তার দাবি, মসজিদটির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে এবং এতে বিভিন্ন মুসলিম নেতা উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বরই অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বর্ষপূর্তি।
এই ঘোষণার পরই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দিক্ষিত বলেন, ‘কেউ মসজিদ বানালে তার সঙ্গে বাবরের কী সম্পর্ক? তারা যদি মসজিদ তৈরি করতে চায়, করতেই পারে।’
কংগ্রেসের আরেক সংসদ সদস্য সুরেন্দ্র রাজপুতের মন্তব্য, ‘কেউ যদি মসজিদ, মন্দির, গুরুদ্বার বা চার্চ বানায়, এতে বিতর্কের কী আছে? কেন বিষয়টিকে অযথা বিতর্কিত করা হচ্ছে? প্রত্যেকেই তাদের উপাসনালয় নির্মাণের অধিকার রাখে।’
এ নিয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনও। সংগঠনের প্রধান মাওলানা সাজিদ রাশিদি বলেন, ‘সম্ভবত তারা বুঝতে পারছেন না, একবার যেখানে মসজিদ তৈরি হয়, সেটি কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই থাকে। ভারতে বাবরি মসজিদের নামে শত শত মসজিদ তৈরি হলেও অযোধ্যার আসল বাবরি মসজিদের গুরুত্ব কখনোই মুছে যাবে না।’
তৃণমূলের এ ঘোষণায় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে নতুনভাবে রাজনৈতিক তরঙ্গ তৈরি হয়েছে, যা আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।