খালেদা জিয়ার ভারত সমীকরণ: ‘দাসত্ব’ আক্রমণ থেকে সন্ত্রাসবিরোধী শপথ পর্যন্ত
এনডিটিভি নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি | প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৩
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার ভোরে দীর্ঘ অসুস্থতার পর ৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনি হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের সংক্রমণের পাশাপাশি নিউমোনিয়ায়ও ভুগছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে দুটি পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ছিলেন। ১৯৯১ সালে গণভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থাকে সংসদীয় ব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য তাকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী দুই নারীর মধ্যে জিয়া ছিলেন একজন। অন্যজন পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। জিয়া ও হাসিনার মধ্যে ভারতের প্রতি নীতিগত ভিন্নতা লক্ষণীয় ছিল।
খালেদা জিয়া মূলত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভারত-সম্পর্ককে দেখতেন। তিনি ভারতীয় ট্রানজিট অধিকার প্রত্যাখ্যান করেছেন, যুক্তি দিয়েছিলেন এটি দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। ১৯৭২ সালের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি পুনর্নবীকরণের বিরোধিতা করেন, কারণ তিনি মনে করতেন এটি দেশের স্বার্থকে শিথিল করেছে।
জিয়া বিএনপিকে ‘বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষক’ হিসেবে তুলে ধরেছেন এবং ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে নীতিমালা তৈরি করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ঢাকায় এক সমাবেশে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ভারতের ট্রানজিট শুল্কমুক্ত ব্যবহারের সমালোচনা করেছিলেন। তবে জিয়ার নীতিগত মনোযোগ শুধু বিরোধিতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি বাংলাদেশের জন্য স্পষ্ট লাভ ও ভারসাম্য নিশ্চিতকরণেও গুরুত্ব দিতেন।
ডাক সংবাদপত্র ঢাকা ট্রিবিউন এর ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, তিস্তা পানি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ট্রানজিট অনুমতির ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে, যেখানে দুই শীর্ষ নারী নেতা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এক দীর্ঘ সময় ধরে।
সুত্র: এনডি টিভি
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।