অসময়ে ঝড়-বৃষ্টি, ফকিরহাটের ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ
ফকিরহাট থেকে | প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৫:৪৭
বাগেরহাটের ফকিরহাটে অসময়ে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ পড়েছে চরম দূর্ভোগে। শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০ টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়ার সাথে বেড়েছে ঠাণ্ডার প্রকোপ। এছাড়া সারাদিন মেঘলা আকাশসহ থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।
ঝড় ও বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আজ দুপুরে গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। হঠাৎ দমকা হওয়ায় কাঁচাঘরের ছাউনি উড়িয়ে নেওয়ার ফলে বৃষ্টিতে ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় বিপাকে পরেছে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। শ্রমিক, ভ্যান চালক ও খেটে খাওয়া মানুষ কাজের সন্ধানে বের হলেও বৃষ্টিতে কর্মহীন অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়।
ফকিরহাট বাজার সংলগ্ন ভৈরব নদের পাশে গড়ে ওঠা বস্তির বাসিন্দা বাচ্চু হাওলাদারসহ কয়েকজন জানান, তারা পলিথিন, ত্রিপল দিয়ে কুঁড়েঘর তৈরি করে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন। প্রতিবছর বর্ষার সময় আসার পূর্বে তা মেরামত করেন যাতে ঘরে বৃষ্টি প্রবেশ করতে না পারে। কিন্তু এবার শীতকালে আগাম ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সবকিছু ভিজে একাকার হয়ে গেছে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ঠাণ্ডায় তারা দূর্ভোগের মধ্যে আছেন।
উপজেলার কাটাখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে প্রায় পঞ্চাশ ঘর বেদে পরিবারের বসবাস। অসময়ের ভারী বৃষ্টিতে কাদা-জলে অর্ধ নিমজ্জিত তাদের কুড়েঘরগুলো। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজ করতে না পেরে বিপাকে আছেন তারা।
ফকিরহাটের কিরণের মোড় এলাকার ভ্যান চালক জুলু সেখ ও বাহিরদিয়া এলাকার ভ্যান চালক আব্দুর রহমান বলেন, সারাদিন আকাশ মেঘলা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় মানুষ ঘরবন্দি। যাত্রী না থাকায় কোন আয় হয়নি। দ্রব্যমূল্য এত বেশি যে সারাদিন খেটে কোন মতে দুবেলা খাবার খাই। আজ সে পথও বন্ধ।
এ সময়ে সামান্য বৃষ্টি কৃষির জন্য উপকার হলেও ভারী বৃষ্টির সবজির জন্য ক্ষতি বলে জানান কৃষক মোস্তফা হাসান। তিনি বলেন, এই মূষলধারে বৃষ্টির কারণে তার আলু ক্ষেতে ছত্রাক জনিত রোগ ও আলু পচে যাওয়ার মতো মড়ক লাগার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া অন্যান্য শীতকালীন সবজি চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়বে অকাল বৃষ্টিতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাছরুল মিল্লাত বলেন, বৃষ্টি আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হবে। বিশেষ করে আলু, সরিষা, টমেটো, মুশুর ডাল চাষের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টির পর ঘন কুয়াশা ফসলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা বেগম বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া শীতে দরিদ্রদের নিয়মিত শীতবস্ত্র বিতরণ করা অব্যাহত আছে।
এনএফ৭১/এমএ/২০২২
বিষয়: ফকিরহাট
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।