বৃহঃস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

নাগেশ্বরীতে গ্রামীণ পাকা সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২১

নাগেশ্বরীতে গ্রামীণ পাকা সড়কগুলোর

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে অধিকাংশ গ্রামীণ পাকা সড়কগুলো। সংস্কার না হওয়ায় এসব সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ধুলোবালিতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পথচারীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এমন করুণ চিত্র।

উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের উত্তর ব্যাপারীহাট থেকে পূর্বে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া বাজারগামী ৪ কিলোমিটার সড়কে দেখা গেছে এমন বেহাল অবস্থা। পুরো সড়কজুড়েই যেনো খানাখন্দে ভরপুর। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে। স্থানীয়রা জানান এই সড়কে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পর্যায়ের চাকুরিজীবি, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজারও মানুষ চলাচল করেন।

প্রায় ১২ বছর আগে এই সড়কটি পাকাকরণ হলেও মাঝখানে ৫-৬ বছর আগে নামমাত্র সংস্কার করলেও আবারও এই সড়কে ভগ্নদশা হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সাপখাওয়া চৌধুরীপাড়া হয়ে উত্তরের মাস্টার মোড় পর্যন্ত সড়কটির চিত্রও একই। একই অবস্থা পৌরশহরের বাজার ব্রিজ থেকে মধুর হাইল্যার উত্তরের শেষ মাথা এবং বটতলা হতে তেলিয়ানির পাড় হয়ে সাপখাওয়া বাজার পর্যন্ত।

এদিকে কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন শহিদ মিনার থেকে থেকে বেরুবাড়ী ও ওয়াপদা বাজার পর্যন্ত সড়কটিরও বেহাল অবস্থা। এছাড়াও হ্যালিপ্যাড আমতলা থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সরকারের বাড়ি হয়ে পশ্চিম সাপখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৫ কিরোমিটার সড়কটির অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। এভাবেই উপজেলার অধিকাংশ পাকা সড়কগুলোই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সামনের বর্ষায় এসব সড়কে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলেও শঙ্কা করছেন চলাচলকারীরা। এদিকে উপজেলায় মোট কত কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে এভাবেই ভঙ্গুর অবস্থায় পড়ে আছে এর হিসেব নেই উপজেলা প্রকৌশলীর কাছেও। তবে তারা জানান কিছু রাস্তার সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। আবার কিছু সড়ক সংস্কারের জন্য তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ এই সড়কগুলো দিয়ে প্রতিনিয়িত নিবন্ধনহীন ইটভাটার ট্রাক ও ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে এমন অবস্থা হয়েছে। ফলে রিকশা, ভ্যান, অটো রিকশা, মিশুক, জিএস, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহনগুলোও চলাচল করতে পারে না। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় বড় বড় গর্ত থাকায় অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হন যান চালক ও যাত্রীরা। এমনকী স্কুল কলেজ ও মাদরাসা পড়–য়া শিক্ষার্থীরাও সময়মতো তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে পারে না।

অপরদিকে কোনো জরুরি রোগিকে নিয়ে হাসপাতালে নিতে গেলে পৌঁছনোর আগেই রোগীর দুর্ঘটনা ঘটে। পশ্চিম সাপখাওয়া গ্রামের সরকারটারী এলাকার সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমান, কৃষক ফারুক হোসেনসহ আরও অনেকে জানান, সড়কগুলো ভগ্নদশা হওয়ায় চলাচলকারীরা অনেক ভোগান্তিতে পড়েন। ধুলোবালির কারণে পরিস্কার জামাকাপর পড়ে অফিস কিংবা জরুরি প্রয়োজনে কোথাও বের হলে আর পরিহিত পোশাক পরিস্কার থাকে না। পুরো শরির যেনো ভ‚তের মতো হয়ে যায়।

এতে করে অনেকের স্বর্দি, কাশি, হাঁপানীসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। এছাড়াও অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রী ও পথচারীরা। বটতলা এলাকার আমিনুর রহমান, দুলাল মিয়া জানান প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার নাগেশ্বরী হাট বসায় এ সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন।

ব্যবসাযী থেকে শুরু করে কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হাটে কেনাবেচা করতে নিয়ে যায়। সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় তারা সময়মতো তাদের উৎপাদিত পন্য হাটে তুলতে না পেরে ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হন তারা। তাই অবিলম্বে উপজেলার মানুষের ভোগান্তি কমাতে সড়কগুলো সংস্কার করা জরুরি বলেও মনে করেন সবাই।

উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজিব বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে জনগণ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আমরা এর মধ্যে ১২ কিলোমিটার সড়ক যেটা স্পেশালি তালিকা প্রস্তুত করে আমফানে প্রেরন করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনুমোদন না হওয়ার কারণে আমরা কোনো কাজ করতে পারি নাই।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top