মায়ের মরদেহ কবর থেকে তুলে ঘরে রাখলেন ছেলে সজিব, এলাকায় চাঞ্চল্য
গাজীপুর প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মোথাজুরী এলাকায় ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। রোববার (২৩ নভেম্বর) গভীর রাতে পারিবারিক কবরস্থান থেকে মায়ের মরদেহ তুলে এনে ঘরে মশারি টানিয়ে লেপ-কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখেন ছেলে সজিব হোসেন। সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিবেশ।
স্থানীয়রা, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খোদেজা বেগম স্বামী আনতাজ আলীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে সজিবকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। সময়ের সঙ্গে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠা সজিব প্রায়ই মায়ের সঙ্গে অশান্তি ও নির্যাতন করতেন। গত শনিবার দুপুরে মা-ছেলের তীব্র ঝগড়ার পর অভিমান ও মানসিক যন্ত্রণায় খোদেজা বেগম গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
কিন্তু মধ্যরাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর সজিব গোপনে কবর খুঁড়ে মায়ের মরদেহ ঘরে এনে রাখে। সোমবার সকালেই এলাকাবাসী কবর খোলা দেখে সন্দেহ করে। অনুসন্ধান করে জানা যায়, সজিব ঘর বন্ধ করে রেখেছে এবং আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় সজিবের ঘরের তালা ভেঙে মশারির নিচে লেপ-কাঁথায় মোড়ানো অবস্থায় খোদেজা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে। তখন মরদেহ থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
পরিবার জানায়, আগের রাতেই সজিব তার মামা আব্দুল মান্নান মিয়াকে ফোন দিয়ে 'মাকে কেনো দাফন করা হলো'—এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দাফনকাজে অংশ নেওয়া স্বজনদের হত্যার হুমকি দেন।
নিহতের ভাই আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, “সজিব আমাকে ফোন করে বলেছে, মাকে কেন মাটি দিলেন। সে আমাকে হত্যারও হুমকি দিয়েছে। আমরা পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি।”
ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সুরুজ জামান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও মর্মান্তিক। স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহটি পুনরায় দাফন করা হয়েছে।”
ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় এখনো আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।