দুষ্কৃতিকারীরা দেশজুড়ে রক্তপাত করছে, কিন্তু ধরা পড়ছে না কেন—রিজভীর প্রশ্ন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৩
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “দুষ্কৃতিকারীরা সারা বাংলাদেশে রক্তপাত করছে, কিন্তু ধরা পড়ছে না কেন? আগে তো অপরাধের পর একদিন, দুদিন কিংবা এক মাসের মধ্যেই অপরাধীরা ধরা পড়ত। এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না—এটা কেন?”
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জের সুতার গোপটা এলাকায় জেলা বিএনপির আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “এদের অত্যাচার, নৃশংসতা ও রক্তপিপাসু চেতনা পুরো বাংলাদেশকে একসময় মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছিল। ৫ আগস্ট পুলিশের গুলির মুখে নিজের জীবন দিয়ে ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনার মতো ভয়ংকর দানবীকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। কিন্তু তারা এখনো থেমে নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, যারা বিদেশে আশ্রয় দিয়েছে, তারা দুধ-কলা দিয়ে পোষণ করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে সুতার টান দিচ্ছে। চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকে গুলি, ঢাকায় তরুণ ছাত্রনেতা হাদি হত্যাকাণ্ড এবং লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন দিয়ে শিশুহত্যা—সবই একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা তৎপর হোন। না হলে আপনাদের ভূমিকা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হবে। নিষ্ক্রিয়তার কারণে যদি অপরাধী ও খুনিরা পার পেয়ে যায়, তাহলে এ দেশে অন্ধকার নেমে আসবে।”
তিনি আরও বলেন, অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল হিমালয় পর্বতের মতো প্রাচীর হয়ে দাঁড়াবে।
রিজভীর ভাষ্য অনুযায়ী, লুটপাট ও অর্থপাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটি চক্র নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, যাতে দেশে কোনো নির্বাচন না হতে পারে।
এর আগে অগ্নিদগ্ধ বিএনপি নেতাকে দেখতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে যান রুহুল কবির রিজভী। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য চার লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। পরে নিহত শিশুর কবর জিয়ারত ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, হ্যাপি চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতে তালা লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে তার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আয়েশা আক্তার প্রাণ হারায়। বেলাল হোসেন ও তার আরও দুই মেয়ে স্মৃতি ও বিথী গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি এবং ঘটনার রহস্যও উদঘাটিত হয়নি।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।