কয়েকটি জেলায় ‘লকডাউনের’ পরিকল্পনা
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২১, ১৮:০৩
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে সরকারের বিধিনিষেধ না মেনে শপিং করা ও গ্রামের বাড়ি যাওয়ায় ঈদ পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছিলো সেটাই ঘটতে চলছে। ইতোমধ্যে ঈদের পর আবারও সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। তবে এ সংক্রমণ বেশি বাড়ছে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়।
এর সঙ্গে আরো বেশি শঙ্কা বাড়াচ্ছে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি ও তাদের শরীরে পাওয়া ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। তবে দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি আরো অবনতি হলে ঝুকিপূর্ণ কয়েকটি জেলায় লকডাউন দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন দেয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে দেশের কয়েকটি জেলায় লকডাউন দেয়া হতে পারে। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা, রাজশাহী ও খুলনা পর্যবেক্ষণে আছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উপরে করা একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৭ থেকে ২৩ মে এই এক সপ্তাহে আগের সপ্তাহের (১০ থেকে ১৬ মে) তুলনায় ২২টি জেলায় নতুন রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি ছিল। এগুলোর মধ্যে ১৫টি জেলাই সীমান্তবর্তী। এই জেলাগুলোর মধ্যে ৯টির প্রতিটিতে এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ এর নিচে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঈদের পর সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ তুলনামূলক বেশি। আক্রান্তদের কারো কারো সম্প্রতি ভারত সফরের ইতিহাস আছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় এক দিনেই ভারত থেকে আসা ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় লকডাউন ঘোষণা করার সময় সেখানে সংক্রমণের হার ছিল ৪০ শতাংশের ওপরে। আর অন্য জেলাগুলোতে এখনো সংক্রমণ অনেক নিচে। এখন যদি সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে তাহলে এলাকাভিত্তিক লকডাউন দেয়া হবে। একইসঙ্গে জীবনও বাঁচাতে হবে আবার সুরক্ষাও দিতে হবে।
সংক্রমণ এলাকাগুলোতে এখন আমের মৌসুম চলছে, পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করলে অনেক বড় লোকসানের মুখে পরবে তারা। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি ওইসব এলাকাগুলোর মানুষদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানোর।
এদিকে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সপ্তাহে (১৭–২৩ মে) ১৭৯ জন রোগী শনাক্ত হয়। আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিল ৭৩ জন। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৬৩ শতাংশ এবং পার্শ্ববর্তী জেলা রাজশাহীতে এই হার ৪১ শতাংশে উঠেছে। এছাড়াও ৪০ শতাংশের ওপরে সংক্রমণ রয়েছে খুলনায়। এমন পরিস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বিশেষ লকডাউন চলছে।
সাতক্ষীরায় ঈদের আগে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৩ শতাংশ। গত সোমবার থেকে শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের ওপরে।
এনএফ৭১/আরএইচ/২০২১
বিষয়: লকডাউন পরিকল্পনা কয়েকটি জেলা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।