ঈদের ছুটিতে বাসায় চুরি ঠেকাতে কী করবেন?
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:২৫
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষ ঘিরে পাঁচ দিনের ছুটির অবকাশে যাচ্ছে দেশ। ইতোমধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলো। আর এই সুযোগে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কয়েকগুণ।
বাসা বাড়ির দরজায় ‘অধিক নিরাপত্তা সম্পন্ন’ অতিরিক্ত তালার ব্যবহার, ফাঁকা বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার রেখে না যাওয়া ও ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যেমন- সিসি টিভি ক্যামেরা ও এলার্ম সিস্টেম স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে ডিএমপির নির্দেশনায়।
এছাড়া আবাসিক এলাকাগুলোতে রাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা ও নতুন নিয়োগ করা নিরাপত্তাকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবি সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবাসিক এলাকাগুলোতে সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির ঘোরাফেরা দেখলে নিকটতম থানায় জানাতে এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করতে বলা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো-
১. গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন, পানির লাইন, সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বের হতে হবে। বাসা–বাড়িতে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে দরজা–জানালা খুলে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ অন করা যাবে না।
২. বাসা-বাড়িতে সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা বসাতে হবে। পূর্বে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরা সচল আছে কি-না, সেটি পরীক্ষা করতে হবে।
৩. বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৪. নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রাখতে হবে।
৫. রাতে কিংবা দিনে একসঙ্গে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিতে হবে।
৬. মোটরসাইকেল চুরি রোধে অ্যালার্ম লাগাতে হবে। এতে কেউ মোটরসাইকেল স্পর্শ করলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। লক করার কাজে স্টিলের তৈরি মেরিন অ্যাংকর চেইন ব্যবহার করতে হবে। মোটরসাইকেলে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে এবং চাকাতে উন্নতমানের ডিস্ক লক ব্যবহার করতে হবে।
৭. দেশের কিংবা বিদেশের কোনো আইপিএস কিংবা বিসিএস কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা ইত্যাদি পরিচয়ে ফেসবুকে পাঠানো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে প্রতারিত কিংবা ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হতে পারেন। সেজন্য এ ধরনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করা উচিত হবে না।
৮. যার নাম–ঠিকানা আপনার জানা নেই, এমন অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া ভিডিও কল গ্রহণ করবেন না। এরূপ ভিডিও কলে পাঠানো অশ্লীল ছবি কিংবা ভিডিও রেকর্ড করে আপনাকে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতে পারে।
৯. আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কিংবা বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্ট কোনো ব্যক্তি বন্ধ করতে পারে না। এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ভয় দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কিংবা পিন নম্বর বিভিন্ন কৌশলে বারবার চাইতে পারে। এ ধরনের ফোন কল পেয়ে কোনো অবস্থাতেই পাসওয়ার্ড কিংবা পিন কোড দেওয়া যাবে না।
১০. ভুল করে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে- এমন ফোন কল পেলে যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না। লটারি জিতেছেন কিংবা বিদেশ থেকে দামি উপহার কিংবা ডলার পাঠানো হবে এরূপ মুঠোফোন কল পেয়ে বিশ্বাস করবেন না। এয়ারপোর্ট কাস্টমসে কিংবা এনবিআর অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করতে হবে জানিয়ে প্রতারকেরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের লোভে পড়বেন না।
১১. অত্যন্ত দামি ধাতুর তৈরি সীমান্ত পিলার এ বিনিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা লাভ করা যাবে এরূপ প্রলোভনে বিশ্বাস করবেন না। প্রতারকেরা নকল পিলার দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। বাস্তবে এ ধরনের কোনো পিলার নেই।
১২. ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো ইত্যাদি আইডিতে আত্মীয়, বন্ধু কিংবা পরিচিত ব্যক্তির বিপদে পড়ে জরুরি টাকা পাঠানোর অনুরোধ পেলে ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর কিংবা তার পরিবারের লোকজনের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ না করে কোনো টাকা পাঠাবেন না। মুঠোফোন চুরি করে কিংবা বিভিন্ন আইডি হ্যাক করে এ ধরনের অনুরোধ পাঠানো হয়।
১৩. সস্তায় হোটেল ভাড়া করা, বিমানের টিকিট কাটা কিংবা কম খরচে ইউরোপ, কানাডা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর প্রস্তাব কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা অ্যাপসে এলে বিশ্বাস করবেন না।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।