কিংবদন্তির ৫৮তম জন্মদিন আজ

সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন বাংলার বব ডিলান

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৫৫

কিংবদন্তি সঞ্জীব চৌধুরী

ভিন্ন ধারার গান গেয়ে সবার প্রিয় হয়ে ওঠা শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর ৫৮তম জন্মদিন আজ। যিনি একাধারে ছিলেন কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক।

জনপ্রিয় বাংলা ব্যাণ্ডদল দলছুটের প্রতিষ্ঠাতা এই শিল্পী গানের ভাষা আর সুরে ভিন্ন দ্যোতনা এনেছিলেন। ২০০৭ সালে না ফেরার দেশে চলে গেলেও এখনো মানুষের মুখে মুখে শোনা যায় তার গান।

সঞ্জীব চৌধুরী, বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের অন্যরকম এক ব্যক্তিত্ব। যার ভিন্নধর্মী গানগুলো আজও ভীষণ জনপ্রিয়। লোকমুখে ফিরে ফিরে শোনা যায় তারই গান। অনুপ্রেরণা হয়ে আছে নবীনদের জন্য।

সঞ্জীব চৌধুরী

১৯৬৪ সালের এই দিনে হবিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন সঞ্জীব চৌধুরী। পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গানের মানুষ হিসেবে পরিচিত এই শিল্পী পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। কাজ করেছেন স্বনামধন্য বিভিন্ন দৈনিকে। আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিনসহ বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেছেন সঞ্জীব চৌধুরী।

আরও পড়ুন: মেকআপ রুমে মিলল নায়িকার ঝুলন্ত মরদেহ

ছাত্রজীবনে ‘শঙ্খচিল’ নামে একটি গানের দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। লোক গানের প্রতি ছিলো সঞ্জীব চৌধুরীর আলাদা ভালো লাগা। ১৯৯৬ সালে সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘দলছুট গঠন করেন। তাঁর গানের কথা ও সুর স্পর্শ করতো সমকালকে। ছড়িয়ে যেতো ভবিষ্যতের ভুবনে।

সঞ্জীব চৌধুরী

‘আমি তোমাকেই বলে দেবো, ‘বায়োস্কোপের নেশা আমায় ছাড়ে না, ‘হৃদয়ের দাবি, ‘আমি ফিরে পেতে চাই -এর মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন প্রিয় এই শিল্পী। তাঁর আলোচিত অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে আহ্, হৃদয়পুর, আকাশচুরি, জোছনাবিহার ও স্বপ্নবাজী।

ছাত্রজীবনে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গেই সম্পৃক্ত ছিলেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে মিছিলে প্রতিবাদী গান গেয়ে আন্দোলন চাঙ্গা করে রাখতেন। বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়েও তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হয়ে বুক চিতিয়ে প্রতিবাদের গান গাইতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। তাঁর প্রতিবাদের ধরন তরুণ প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে উজ্জীবিত করে। তাই সঞ্জীব চৌধুরীকে প্রজন্মের কণ্ঠস্বর হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

সঞ্জীব চৌধুরী

গানের পাশাপাশি কবিতাও লিখতেন সঞ্জীব চৌধুরী। দেশের প্রায় সব পত্রিকায়ই তার কবিতা ছাপা হয়েছে। তার একমাত্র কাব্যগ্রন্থের নাম রাশপ্রিন্ট। শুধু কবিতা নয়, সঞ্জীব চৌধুরী বেশ কিছু ছোট গল্প ও নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। সঞ্জীব চৌধুরী নিজেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত একমাত্র নাটক সুখের লাগিয়া।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ২০০৭ সালে মারা যান সঞ্জীব চৌধুরী। তিনি না থাকলেও জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে দেশের সঙ্গীত প্রিয় মানুষেরা।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top