মারা গেছেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৭
একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে পাপিয়ার মৃত্যু হয়।
সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী সারোয়ার এ আলম। এ সময় তিনি বলেন, পাপিয়া আর আমাদের মাঝে নেই। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার দিকে চিকিৎসক তার লাইফ সাপোর্ট খুলে মৃত ঘোষণা করেছেন। ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠে জানাজা করে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হতে পারে।
কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলে ঢাকার তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। এর আগে কয়েকদিন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না, চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন গুণী এই শিল্পী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
মেয়ে জারা সারোয়ার যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব নিউ জার্সিতে জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এবং ছোট মেয়ে জিশা সারোয়ার কানাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন নির্বাহী।
প্রসঙ্গত, পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। পরে ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারত যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান। আর এর আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরবর্তীতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতদীক্ষা নেন।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন। আধুনিক গানেও তিনি সফল। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
রবীন্দ্রসংগীতে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন পাপিয়া সারোয়ার। ২০১৫ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ। ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেছেন তিনি।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।