শরতের স্নিগ্ধতা!

ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ৩১ আগষ্ট ২০২০, ২০:১৭

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক। নিউজফ্ল্যাশ৭১.কম

প্রকৃতির রাণী শরৎ যেন মেঘ মাধুর্যে পরিপূর্ণ বর্ষার আকাশে মেঘের বারিধারাকে বলে ওঠে ‘যেতে নাহি দিব’। তাই হয়তো গাঢ় নীল আকাশ, সোনা ঝরা রোদ, শুভ্র-মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ায়; চোখে। নদীর ধারে ঝিরিঝিরি বাতাসে দোল খায় নরম কাশফুল, ধবল বক আর পাখ-পাখালির দল মহা-কলরবে ডানা মেলে আকাশের উজ্জ্বল নীলিমার প্রান্ত ছুঁয়ে মালার মতো উড়ে চলে। বাঁশঝাড়ে বাচ্চা তুলা কালো ডাহুক, পুকুর ধারে জারুল গাছে বসা মাছ শিকারী মাছরাঙা, বাতাসে ছোট ছোট ঢেউ তুলে নদীতে পাল তুলে চলা নৌকা, মোহনীয় চাঁদনী রাত, মায়াবী পরিবেশ, আঁধারের বুক চিরে উড়ে বেড়ায় জোনাকীরা।

শরতে বাংলা যেন তার রূপের বৈচিত্র্যটা যেন নিজের মতো করেই মেলে ধরে। চারদিকে সজীব গাছপালার ওপর বয়ে যাওয়া মৃদুমন্দ বায়ু, শিউলী, কামিনী, হাসনাহেনা, দোলনচাঁপা,  বেলী,  ছাতিম, জারুল, রঙ্গন, টগর, রাধাচূড়া, মধুমঞ্জুরিমা, শ্বেতকাঞ্চন, মল্লিকা, মাধবী, কামিনী, সন্ধ্যামণিসহ নাম না জানা নানা জাতের ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করা বাতাস, চারপাশের শুভ্রতার মাঝে বৃষ্টির ফোঁটা আবার কখনো বৃষ্টি-শেষে রোদের ঝিলিক, দিগন্ত-জুড়ে সাতরঙা হাসি দিয়ে ফুটে ওঠা রংধনু।  বাংলার প্রকৃতিতে  কেবল এই ঋতৃতেই এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য চোখে পড়ে। শরতকে তাই অনেকে শুভ্রতা কেউ আবার মোহনীয় ঋতুও বলে সম্বোধন করেন।

শরতের স্নিগ্ধতায় সবাইকে হারিয়ে নিতে শরতের আকাশ নিজের মতো করেই নিজেকে সাজিয়ে তোলে। শরৎ রাতে জ্যোৎস্নার রূপের আলোক ছটায় গন্ধ বিলিয়ে ফুলেরা ঝরে পড়ে। চাঁদের আলোর শুভ্রতায় যেন আকাশ থেকে কল্পকথার পরীরা ডানা মেলে নেমে আসে ধরণীতে । শরতের আকাশের ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘের সাথে শৈশবের স্বপ্নেরা ঘুরে বেড়ায়, উড়ে বেড়ায় লাটাই বাঁধা ছোট কাগজের তৈরি ঘুড়িরা।

শাশ্বত বাংলায় শত বছরে যে আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে, তাপ বিকিরণ, জ্বালানি ক্ষয়, পরিবেশ হানির কারণে তা বদলে যাচ্ছে। সারা দুনিয়াই এখন আবহাওয়া বিপর্যয়ের মুখোমুখি। শীতের দেশে গরম পড়ছে। গরমের দেশে বাড়ছে উষ্ণতা। চরম ভাবাপন্নতা আচ্ছন্ন করছে তাবৎ পৃথিবী ও পৃথিবীর মানবমণ্ডলীকে। সন্দেহ নেই, মানুষের অবিমৃশ্যতায় আবহাওয়া হচ্ছে বিরূপ। প্রকৃতি হয়ে যাচ্ছে বৈরী। বসবাসের পরিবেশ ও পরিস্থিতি হচ্ছে বিক্ষুব্ধ।

প্রকৃতি তার নিজস্বতায় বেঁচে থাকুক; ঋতু রাণী ফিরে আসুক স-মহিমায়, শরতের আনন্দে পৃথিবী বেঁচে থাকুক জীবনভর।

এনএফ৭১/এনএম/২০২০

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top