ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটায় যেসব খাবার

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৪:০৮

ছবি: সংগৃহীত

মানুষের শরীর সুস্থ থাকার জন্য ক্যালসিয়াম খুব প্রয়োজনীয়। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিদিন ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া প্রয়োজন। তবে গর্ভাবস্থায় এবং যেসব মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাঁদের বেলায় এটি আরো বেশি প্রয়োজন। আমাদের শরীরের ৯৯ শতাংশ ক্যালসিয়াম সংরক্ষিত হয় হাড় ও দাঁতে। বাকি ১ শতাংশ পাওয়া যায় রক্ত, পেশী এবং কোষীয় তরলে।

আরও পড়ুন>>> এক নজরে দেখে নিন যেসব খাবার কিডনির জন্য ক্ষতিকর

আমাদের শরীরের কাঠামো তৈরি হয় হাড়ের মাধ্যমে। অথচ হাড়ের যত্নের বিষয়ে আমরা বেশির ভাগ মানুষই খুব উদাসীন বা তেমন ভাবে কিছুই জানি না। তবে এমন অনেক খাবার বা খাদ্য উপাদান রয়েছে যেগুলি নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়, হাড় হয়ে ওঠে মজবুত।ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটায় যেসব খাবার সেগুলো আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিত। যেমন:

সবুজ শাক সবজি: সবুজ শাক সবজিও ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস। পালং শাক, ব্রোকলি, শালগম ইত্যাদি সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে।

চিংড়ি: মজাদার এই মাছটি থেকে আপনি ক্যালসিয়াম পেতে পারেন, যদি এটি অল্প আঁচে রান্না করেন। চিংড়ি মাছ খুব বেশি রান্না করবেন না। এতে এর ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।

ডিম: ডিমকে বলা হয় ‘সুপারফুড’। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস। প্রোটিনের সব চাইতে ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। যা হাড়ের গঠন মজবুত করে। এবং এতে ক্যালোরিও থাকে বেশ কম। তাই হাড়ের সুস্থতায় দিনে অন্তত ১ টি ডিম খাওয়ার অভ্যাস করুন।

দুধ: ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস হল দুধ। প্রতিটি নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্লাস করে দুধ পান করা উচিত। এক গ্লাস দুধে কিছু পরিমাণ প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে পান করুন।

টকদই: অনেকেই দুধ খেতে পারেন না অথবা দুধে তাদের অ্যালার্জি রয়েছে। তারা টকদই এর মাধ্যমে তাদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে। টকদই থেকে আপনি একই পরিমাণ ক্যালসিয়াম পেয়ে থাকবেন।

পনির: দুগ্ধ জাতীয় খাবারের মধ্যে পনির অন্যতম। পারমেজান চিজে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। দুধের পরিবর্তে পারমেজান চিজ খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।

খেজুর: খেজুরের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেসিয়াম। খোরমা খেজুর খেলে ভালো কাজ হবে। খেজুর দেহে ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে।

কমলা: ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এই ফলটি প্রতিদিনের নাস্তায় রাখুন। অথবা প্রতিদিনের নাস্তায় এক গ্লাস কমলার রস পান করুন। একটি মাঝারি আকৃতির কমলা থেকে ৬৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

বেগুন: বেগুন ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ‘ই’ এবং ‘কে’ সমৃদ্ধ সবজি। ভিটামিন ‘এ’ চোখের পুষ্টি জোগায়, চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী বেগুনে রয়েছে ০.৮ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১.৩ গ্রাম আঁশ, ৪২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ২৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৯ মিলিগ্রাম লৌহ।

ঢেড়স: ৫০ গ্রাম ঢেড়স বা ভেন্ডিতে প্রায় ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে রাখুন ঢেড়স। উপকার পাবেন।

কাঠবাদাম: এক কাপ ভাজা কাঠবাদাম থেকে ৪৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তবে এটি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়, এক কাপ কাঠবাদাম থেকে প্রায় ১০০০ ক্যালোরি পাওয়া যায়।

তিল: সাধারণত বার্গারের বনরুটিতে তিল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক টেবিল চামচ তিল থেকে ৮৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

সয়াবিন: শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সয়াবিন অত্যন্ত কার্যকর। এক কাপ সয়াবিনে প্রায় ১৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত পাতে রাখুন সয়াবিন।

এছাড়া সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এছাড়া মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top