কোটা পুনর্বহাল করে দেওয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৪, ২২:০৩
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রোববার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় প্রকাশ করেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
অর্থাৎ ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে, আগামী ৭ আগস্ট রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানিতে আর বাধা নেই।
২৭ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াত বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে ২০১২ সালের হাইকোর্টের একটি রায় ও ২০১৩ সালে লিভ টু আপিলের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের একটি রায়ে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বজায় রাখার নির্দেশনা আছে।
৩০ ভাগ কোটা পূরণ না হলে মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ হবে। তাই কোটা বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপন অবৈধ ও আদালত অবমাননার সামিল। রায়ে মুক্তিযোদ্ধা, জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটার বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে সরকার চাইলে কোটা পরিবর্তন ও পরিমার্জন করতে পারবে। এদিকে, এই রায় অকার্যকর করে হাইকোর্টের বাতিল করা প্রজ্ঞাপনের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছে আপিল বিভাগ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। এতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
বিষয়টি আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে। গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন না। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকেলে আবারও ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারে আইন পাসের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে আজ বেলা ১২টার পরপর বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি নিয়ে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।